এসবিএন ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ যা বলে তা করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। আজ বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের খানবাড়ীতে এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। এই মাসে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালি জাতিকে দাবায় রাখা যাবে না। সে কথা সত্য হয়েছে। বাঙালিকে দাবায় রাখা যায়নি। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। খাদ্যের জন্য বাংলাদেশকে অন্যের কাছে ভিক্ষা চাইতে হয় না, হাত পাততে হয় না। শেখ হাসিনা বলেন, ওয়াদা করেছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। আমরা তা করেছি। বাকিদের বিচারকাজ চলছে। যত চেষ্টাই করুক, কেউ এই যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে পারবে না। শেখ হাসিনা বলেন, কেউ গুনাহ করলে মৃত্যুর পর দোজখের আগুনে পুড়বে। বিএনপি-জামায়াত দেশের মানুষকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়েছে। এখন বলছে, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যারা এসব করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কি ফুলের মালা গলায় দিয়ে পূজা করা হবেÑ এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ পোড়ানোর জন্য যারা হুকুমদাতা, অর্থ সংস্থানকারী, পরিকল্পনাকারী- তাদের প্রত্যেকের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। এর আগে সকালে স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসন ও মূল পাইলিংয়ের কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা পয়েন্টে সেতুর নদীশাসন এবং পরে মাওয়ায় সেতুর মূল পাইলিংয়ের কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। আজ সকাল ১১টায় হেলিকপ্টারযোগে জাজিরায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এসময় জাজিরার নাওডোবা পয়েন্টে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী শাসন ও সংযোগ সড়কের কাজের ফলক উন্মোচন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন। সেখানে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০০১ সালে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবার আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ করি। পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বিশ্বব্যাংকের সাথে চুক্তি হয়। হঠাৎ করে তারা একটা দুর্নীতির অভিযোগ এনে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। পরে কোথায় দুর্নীতি হয়েছে জানতে চেয়ে তাদের আমি চিঠি লিখি। কিন্তু তারা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি এবং উত্তরও দিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক সরে দাঁড়ানোর পর আমরা নিজেদের অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। এতে দেশের জনগণ সাহস আমাদের জুগিয়েছে। তাদের সমর্থনের কারণেই আমরা লক্ষ্যে পৌছাতে পেরেছি। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেনÑ বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আজকেও সেটা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশী-বিদেশী কোন ষড়যন্ত্রই আর এই সেতুর নির্মাণ রুখতে পারবে না। সময়মতো সেতুর কাজ শেষ হবে। সেতুটি নির্মাণ হলে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তিনি বলেন, আমরা শুধু ক্রিকেটেই সেঞ্চুরি করছি না। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আমরা সেঞ্চুরি করেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাবলম্বী হবে। এখনও আর কারও কাছে আমাদের হাত পাততে হয় না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীত্ব আমার কাছে বড় বিষয় নয়। আমি জাতির পিতার কন্যা। দেশের মানুষের সেবা করতে এসেছি। সেতু নির্মাণ কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে যারা সেতু নির্মাণে জমি দান করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।