সিলেট বাংলা নিউজঃ অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে প্রগতিশীল সংগঠন ‘চেতনায় ৭১ বাংলাদেশ সিলেটের উদ্যোগে গত ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জি এম জে সাদেক কয়েছ গাজী’র সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়কারী সচিব মনির হোসাইন ও ফখরুল ইসলাম শান্ত’র যৌথ পরিচালনায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালনের নিমিত্তে এক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও স্বাধীনতা সম্মাননা প্রদান-২০১৬ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে আব্দুল মোমিন বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে থাকবে না জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা।
শিশু ও নারীদের উপর কোন আঘাত আসবে না। বেকারত্ব গুছবে, কমবে ধনি-দরিদ্র্যের বৈষম্য। এছাড়া রাজনীতিবিদরা হবেন সৎ, শিক্ষিত ও দক্ষ।
মানুষ হবে আরো মানবিক, আরো সুসংগঠিত। আর সবার হাত ধরে গড়ে উঠবে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক এবং পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির মহান নায়ক স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এম এ বাছিত। তিনি বলেন, যে সমৃদ্ধি ও ভালো থাকার স্বপ্ন নিয়ে আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সেই স্বপ্ন বার বার ভুলণ্ঠিত হয়েছে।
যিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যিনি স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন তাঁকেই আমরা মেরে ফেলেছি। ৪৬ বছর আগে আমরা স্বাধীন হয়েছি। দেশ এখন বয়ঃপ্রাপ্ত বলাই যায়। ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস, আত্মমুক্তির ও আত্মপ্রত্যয়ের প্রতীক এই দিবস।
কিন্তু দীর্ঘ ৯ বছর দিনটি জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃত ছিলো না। এই ঐতিহাসিক দিবসকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৯৮০ সালের ২৬শে মার্চ দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, কোথায় যেন অপূর্ণতা থেকেই গেল। স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে যে ত্যাগ স্বীকার করা হয়েছে, তা যেন আমরা ভুলে গেছি।
আজও আমাদের স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে বিতর্ক শুনতে হয়। এই বিতর্ক আমাদের দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিএনপি, জামায়াতের এত অনিহা কেন? কারণ তারা পাকিস্তান প্রীতি আদৌ ছাড়তে পারেনি। তারা যদি দেশকে প্রকৃতভাবে ভালোবাসতো তাহলে বর্তমানে দেশের যে উন্নয়নের ধারা তা কখনো বাধাগ্রস্ত হতো না।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক সাবেক এমপি ইসমত আহমদ চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট রফিকুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ বাছিত, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরী, প্রবাসী জয়নাল আবেদীন জয়নাল মিয়া, খাদিমপাড়া ইউপি’র নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট আফছর আহমদ, জালালাবাদ ইউপি’র নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. মনফর আলী, টুলটিকর ইউপি’র নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এস এম আলী হোসেন, মোছা. সালাম বাছিত, বিশিষ্ট ব্যাংকার গজনফর আলী, প্রবাসী আলহাজ্ব শাহনূর চৌধুরী, ইকবাল আহমদ চৌধুরী, সম্পাদক ও প্রকাশক মুজিবুর রহমান মুজিব, গণসংগীত শিল্পী অংশুমান দত্ত রঞ্জন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গোপ্ত।
বিশিষ্ট সমাজসেবী হাজী জাহাঙ্গীর আলম, তরুণ সংগঠক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পার্থ সারথী দাস, আলমগীর হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. নাজরা চৌধুরী, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মলীগ সিলেট জেলা সভাপতি দেওয়ান মুরাদ হাসান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড মহানগর শাখার আহবায়ক নূর আহমদ কামাল প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপ-সচিব ফখরুল ইসলাম শান্ত, গিয়াস উদ্দিন, আশরাফ আহমদ আছাদ, মিজান রাজা চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তি আর বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় লক্ষ্য নিয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন সেই অবিনশ^র প্রতীক আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ।
তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার অভিযাত্রায় সকল অশুভ অপশক্তিকে রুখে দিয়ে বাঙালির হৃদয়ে চিরজাগরুক, চির ভাস্বর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্বত রেখে অসম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।