সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্ক: সেনাবাহিনীর তৈরি সংবিধানের কারণে অং সান সুচি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতে না পারলেও সর্বোচ্চ এই নির্বাহী পদের উপর প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা দিয়ে তার জন্য নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেশটির সংসদের উচ্চ কক্ষে পাস হয়েছে।
শুক্রবার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নতুন সরকারের দ্বিতীয় দিনে তাকে ‘রাষ্ট্র উপদেষ্টা’ বানানোর প্রস্তাব দিয়ে উত্থাপিত একটি বিল সেনাবাহিনীর বিরোধিতার মুখেই পাস হয়।
এখন বিলটি নিম্নকক্ষে পাস হলে নোবেলজয়ী এই গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী মিয়ানমারের সর্বোচ্চ ক্ষমতার ভাগীদার হবেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর প্রধান তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন সুচি। ‘রাষ্ট্র উপদেষ্টা’ হলে প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বের পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের উপরও প্রভাব খাটাতে পারবেন তিনি।
সামরিক জান্তা আমলে তৈরি সাংবিধানিক বাধার কারণে স্বামী, সন্তান বিদেশি নাগরিক হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হতে পারেননি নোবেল বিজয়ী সুচি। এ কারণে তার স্কুল জীবনের বন্ধু এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোগী থিন কিয়াওকেই প্রেসিডেন্ট করেছে এনএলডি।
গণতন্ত্রের লড়াইয়ে বহু বছর গৃহবন্দী অবস্থায় কাটানো সুচি তার দল এনএলডির নিরঙ্কুশ জয়ের পর সংবিধানের ওই বিধিকে ‘ফালতু’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, যে কোনো অবস্থাই দেশ চালাবেন।
নতুন এই পদ সৃষ্টি তার ওই ঘোষণাকেই বাস্তবে রূপ দেবে। তবে বিষয়টি ততোটা সহজ হবে না বলে মনে করেন অনেকে।
কারণ সংবিধান অনুযায়ী সংসদের এক চতুর্থাংশ আসন দখলে রাখা সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছেন।
তারা বলছেন, রাষ্ট্র উপদেষ্টার পদটি এক ব্যক্তির হাতে এতোটাই ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেছে যে এতে ক্ষমতার ভারসাম্যে ঘাটতি তৈরি হবে।
উচ্চকক্ষের সদস্য কর্নেল মিন্ট সুয়ে বলেন, ওই বিলের বিধানগুলোর যে অর্থ দাঁড়ায় তা হলো রাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রেসিডেন্টের সমান, যা সংবিধানের সঙ্গে বিরোধাত্মক।
কোন কোন সদস্য ওই বিলের বিষয়ে সিদ্ধান্তের ভার সাংবিধানিক ট্রাইবুনালের উপর ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন।
সেনাবাহিনীর বাধার পরও অনুমোদন পাওয়া ওই বিল নিয়ে বিতর্কের জন্য সোমবার নিম্ন কক্ষে তোলা হবে। সংসদের উভয় কক্ষে এনএলডির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিল পাসে সেনাবাহিনীর অনুমোদন লাগবে না।
তবে সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে সুচির দলকে সেনাবাহিনীর অনুমোদন নিতে হবে। সংশোধনের জন্য ৭৫ শতাংশের বেশি সংসদ সদস্যের সমর্থন লাগবে।