এসবিএন ডেস্ক:
প্রায় চার ঘণ্টা পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো রাজধানীর কদমতলী থানার শ্যামপুরে স্যুয়ারেজ লাইনের ভেতর পড়ে যাওয়া ইসমাইল হোসেন নীরব নামের ৬ বছরের একটি শিশুকে। উদ্ধারের পর নীরবের নিথর দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোহেল রানা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বড়ইতলা জাগরণী মাঠের পশ্চিম দিকের পালপাড়া রোডের স্যুয়ারেজ লাইনে পড়ে যায় শিশুটি। প্রায় চার ঘণ্টা পর রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে থেকে এক কিলোমিটার দূরে শ্যামপুর লঞ্চ ঘাট এলাকায় মৃত অবস্থায় নীরবকে উদ্ধার করা হয়।
আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালের ২৬শে ডিসেম্বর রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠ সংলগ্ন পরিত্যক্ত পানির পাম্পের ৩০০ ফুট গভীর পাইপে পড়েছিল ৪ বছরের শিশু জিহাদ। ২৩ ঘণ্টার শ্বাস-রুদ্ধ নাটকীয়তার পর শিশু জিহাদকে মৃত অবস্থায় ওয়াসার গভীর নলকূপের পাইপ থেকে বের করে আনে স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা। ওই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার ক্ষমতাও প্রশ্নের মুখে পড়ে।
ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয় নীরবকে
শিশু নীরবকে ধাক্কা দিয়ে স্যুয়ারেজ লাইনের ভেতরে ফেলে দেয়া হয়ে বলে অভিযোগ রয়েছে তার চাচা সোহারাব আলীর।
সোহরার আলীর ভাষ্য অনুযায়ী, বিকাল ৪টার দিকে নীরব অন্য দুই শিশুর সঙ্গে বড়ইতলা জাগরণী মাঠের পশ্চিম দিকের পালপাড়া রোডে ওই সুয়ারেজ লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন স্থাপিত একটি নাগরদোলা দেখছিল। নীরবের সঙ্গে আরো যে দুই শিশু ছিল তাদের একজন হৃদয়।
এই হৃদয়ই সোহরাব আলীকে এ কথা জানিয়েছেন। তবে যে শিশু নীরবকে ধাক্কা দিয়েছে বলে হৃদয় দাবি করছে তার নাম সে জানাতে পারেনি। একই রকম অভিযোগ নীরবের মা নাজমারও।
আসছে জানুয়ারিতেই নীরবের স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। তাদের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনিতে। তার বাবা রেজাউল গাউসিয়ার ভুলতায় আরএফএল ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন বলে জানা গেছে। রেজাউল-নাজমা দম্পতির একমাত্র ছেলে নীরব।
সুত্রমতে জানা গেছে, এই স্যুয়ারেজ লাইনে আগেও প্রাণ গেছে আরোও এক শিশুর। যে স্যুয়ারেজ লাইনে পড়ে আজ প্রাণ গেল শিশু নীরবের বছর চারেক আগে সেখানে পড়ে গিয়ে প্রাণ গেছে আরো এক শিশুর। ওই শিশুর নাম শিহাব। তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।
নীরবকে উদ্ধারে অভিযানের মধ্যেই নিজের ছেলেকে হারানোর এ কথা জানিয়েছেন শিহাবের মা শিরিন। শিরিনের অভিযোগ, ৪ বছর আগে এই স্যুয়ারেজ লাইনে পড়ে গিয়ে তার ছেলে নিহত হলেও দুর্ঘটনা রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
শিহাবের ঘটনার বিষয়ে তিনি আরো জানান, শিহাব পড়েছিল দুপুর ১২টার দিকে। বিকাল ৩টার দিকে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পালপাড়া রোডে ঠিক এই এলাকাটিতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। গতকাল এক বৃদ্ধ পড়ে গেলে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে।