সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির আংশিক কমিটিতে ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব থেকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। রুহুল কবির রিজভীকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব করা হয়েছে। আর কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন মিজানুর রহমান সিনহা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিএনপির পঞ্চম কাউন্সিলের পর দলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত নেতা খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। ২০১১ সালের ১৬ মার্চ তিনি মারা যান। এরপর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়। এরপর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তাকে ভারমুক্ত করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত সাতবার জেল খেটেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৪টি মামলা। ৩৫টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও গ্রহণ করা হয়েছে। কারাগারে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকা এই নেতা রোগাক্রান্তও। চিকিৎসার জন্য প্রায়ই তাকে দেশের বাইরে যেতে হয়। এরপরও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন।
দলের দায়িত্বশীল দুজন নেতা জানান, মির্জা ফখরুল ইসলামের মহাসচিব পদ পাওয়া অনেকটাই অনুমিত ছিল। কারণ সংকটের সময়ে তিনি দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তা ছাড়া প্রতিকূল পরিবেশেও তিনি আপস করেননি। তা ছাড়া দলের ব্যাপারে তিনি বেশ নিবেদিতপ্রাণ এবং হাইকমান্ডের প্রতি আনুগত। সে জন্য তিনি মহাসচিব হচ্ছেন, তা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল।
সূত্র জানায়, মহাসচিব পদ পাওয়ার দৌড়ে ফখরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বেশ কয়েকজন নেতা। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই ছিটকে পড়েছেন। দলের আপদকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পুরস্কার হিসেবে তাকে মহাসচিব করা হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও এ বিষয়ে গ্রিন সিগন্যাল রয়েছে।
দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে মির্জা আলমগীর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন এবং প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল হন। ঢাকা ও চট্টগ্রামের নেতাদের বিরোধ যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সেই উদ্যোগ নিয়েও সফল হয়েছেন।
জোটের সমন্বয়কের দায়িত্বও বেশ ভালোভাবে পালন করেছেন তিনি। দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি সংঘাতপূর্ণ না করে শান্তিপূর্ণ করার চেষ্টা চালিয়ে দলের বাইরেও প্রশংসিত হন।
দলের নেতা-কর্মীদের বাইরেও দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, অন্যান্য রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেও মির্জা ফখরুলের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সামগ্রিক বিবেচনায় দলের ভেতরে-বাইরের দক্ষতার বিচারে মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব করা হয়।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কাউন্সিল হয়। দ্বিতীয় কাউন্সিল হয় ১৯৮২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ১৯৮৯ সালের ৮ ও ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দলটির তৃতীয় কাউন্সিল। ১৯৯৩ সালের ১, ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপি চতুর্থ কাউন্সিল করে। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর হয় পঞ্চম কাউন্সিল। সবশেষ গত ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিল হয়।