এসবিএন ডেস্কঃ নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি ‘এডমিরাল’ পদে পদোন্নতি লাভ করেছেন।
গত ২৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে প্রকাশিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে নৌবাহিনী প্রধানকে এডমিরাল পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার বিবিপি, এনডিসি, এসিএসসি ও ভারপ্রাপ্ত সেনা প্রধান লেঃ জেনারেল আনোয়ার হোসেন, এনডিসি, পিএসসি নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি কে এডমিরাল র্যাংক পড়িয়ে দেন।
পরে নৌ সদর দপ্তরে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি কে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তিনি গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।এসময় নৌ সদর দপ্তরের স্টাফ অফিসারগণ, সকল পরিদপ্তরের পরিচালকগণ এবং উর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এডমিরাল মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন ১৯৬০ সালে মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম এম এ রশীদ স্কুল শিক্ষক এবং মা মরহুমা মিসেস ফজিলাতুন্নেসা গৃহিনী ছিলেন।
তিনি ১৯৭৬ সালে মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামীয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে লেটার মার্কসহ প্রথম বিভাগে এসএসসি এবং ১৯৭৮ সালে মাদারীপুর নাজিমউদ্দিন সরকারী কলেজ হতে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
তিনি ৩০ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগদান করেন এবং তৎকালীন যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো নেভাল একাডেমি হতে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করেন।
তিনি ১লা আগষ্ট ১৯৮১ সালে কমিশন প্রাপ্ত হন। ভারতের ওঘঝ ঠঊঘউটজটঞঐণ এর অঝড স্কুল হতে তিনি উরংঃরহপঃরড়হ নম্বরসহ পেশাগত বিশেষজ্ঞ কোর্স সম্পন্ন করেন।
এডমিরাল নিজাম ফ্রান্সের প্যারিস হতে আন্তঃবাহিনী স্টাফ কোর্স এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, মিরপুর হতে এনডিসি কোর্স সম্পন্ন করেন। তাছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ দেশে বিদেশে বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
চাকুরী জীবনে এডমিরাল নিজাম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি নৌ সদর দপ্তরে পার্সোনেল সার্ভিস পরিদপ্তরের পরিচালক এবং নৌ প্রধানের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি এবং ট্যাজ স্কুলের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড সদর দপ্তরে অপারেশন্স পরিদপ্তরের পরিচালক ছিলেন।
এডমিরাল নিজাম টর্পেডো বোট, মাইন সুইপার, গানবোট এবং বিভিন্ন ধরনের টহলযানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি নৌবাহিনীর তিনটি বৃহৎ ফ্রিগেট কমান্ড করার দূর্লভ সম্মানও অর্জন করেন।
তিনি নৌবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটির কমান্ডের দায়িত্ব অত্যন্ত সাফল্যের সাথে পালন করেন। এডমিরাল নিজাম দুই বছরের অধিক সময় চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেন এবং নৌ প্রধানের প্রশংসা (ঈড়সসবহফধঃরড়হ) অর্জন করেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে প্রশংসনীয় সার্ভিসের জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক অসামান্য সেবা পদক (ওএসপি) -এ ভূষিত হন। তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন আইভরিকোষ্টে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
এডমিরাল নিজাম ফেব্র“য়ারি ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করে অত্যন্ত সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ সময় চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি সরকারের আন্তরিক সহায়তায় চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপক উন্নতি, সম্প্রসারণ এবং আধুনিকায়নের কাজ করেন। তাছাড়া বিগত প্রায় ৫ বছর বিভিন্ন ক্রান্তিকালে তিনি বন্দরকে সার্বক্ষণিক সচল রেখে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি তিনি দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর, পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছেন এবং পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
দীর্ঘ চাকুরী জীবনে এডমিরাল নিজাম নৌবাহিনী, কোষ্ট গার্ড, আন্তঃবাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা, জাতিসংঘ এবং চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
বিশে¡র বিভিন্ন দেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তিনি অনেক দেশ ভ্রমণ করেন। তিনি ফ্রেঞ্চ ও সার্ব-ক্রোয়েশিয়া ভাষায় কথা বলা ও লিখায় পারদর্শী। মিসেস নাজমুন নাহার তাঁর সহধর্মিনী এবং তিনি দু’জন পুত্র সন্তানের জনক।