এসবিএনঃ শুধু চেয়ারেই বসে আছেন সিসিকের ‘আপাতত’ ভারপ্রাপ্ত মেয়র এডভোকেট ছালেহ আহমদ চৌধুরী। জনসেবামূলক কাগজে স্বাক্ষর করলেও, তাকে সিসিকের প্রশাসনিক কোনো কাজের নথিপত্রে স্বাক্ষর করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এতে অনেকটা অচলাবস্থায় পড়েছে সিলেট নগর ভবন। আইনী লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ছালেহ টিকে থাকতে পারবেন কি-না তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল, সিলেট নগরভবনের কাউন্সিলরদের কক্ষে বসে অলস সময় পার করছেন কাউন্সিলররা। হাতে কাজ না থাকলেও মুখে আলোচনার বিষয় একটিই কে হচ্ছেন মেয়র।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে হয়রানির প্রতিবাদে এখনো দেয়ালে ঝুলছে কর্মবিরতির ব্যানার। সিসিকের নতুন ভবনে অনেক মানুষ এসে ফিরে যাচ্ছেন। কারণ, মেয়র নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় কোনো কাজ হচ্ছে না। কর্মকর্তারা নিজ নিজ টেবিলে বসে আছেন।
মেয়রের চেয়ারে বসলেও তাকে দিয়ে সিসিকের কর্মকর্তারা কোনো নথিপত্রে স্বাক্ষর নিচ্ছেন না। জটিলতা থাকায় তার স্বাক্ষর না নিতেই বলা হয়েছে- এমন কথাই জানালেন কাউন্সিলরা। তবে ছালেহ আহমদ নগরভবনে আসা মানুষের সেবামূলক কাগজে সই করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিসিকের এক কর্মকর্তা বলেন,‘হাতে জমে থাকা পুরোনো কাজ করছি। নতুন কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। মেয়র নিয়ে জটিলতা থাকায় কোনো ফাইলে স্বাক্ষর নেওয়া যাচ্ছে না।’
সিসিক কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস বলেন,‘বসে গল্প-টল্প করছি। সিসিকের পক্ষ থেকে ছালেহ ভাইকে দিয়ে কোনো প্রকল্পের কাজে স্বাক্ষর না নিতে বলা হয়েছে। তাই কোনো কাজ নেই।’
সিসিক সূত্র জানায়, কে হবেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র? এ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন সবাই। আইনের ফাঁকফোকর খুঁজতে কাগজপত্র ঘাঁটছেন সংশ্লিষ্টরা।
মেয়র আরিফ যাকে দিবেন, তিনিই হবেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র- এই সিদ্ধান্ত নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধি দল ৩ কার্যদিবসের মধ্যে আরিফুল হকের সঙ্গে কারাগারে দেখা করার কথা।
কিন্তু এখানে আরিফের মতামতের সুযোগ আছে কি-না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে ছালেহ আহমদ চৌধুরী শেষ পর্যন্ত আইনী লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারবেন কি-না তা নিয়ে তিনি নিজেই সংশয় প্রকাশ করেছেন।
জানতে চাইলে সিসিকের ‘আপাতত’ ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছালেহ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘দেখা যাক কী হয়, প্রজ্ঞাপনের কারণেই সমস্যা জটিল হয়ে গেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না আমাকে দিয়ে কোনো ফাইলে স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে না।’
প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ‘আইন যেটা বলবে, আমি সেটাতেই আছি। তবে মেয়র পদ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হওয়ায় বৈঠকের মাধ্যমে সবাই আপাতত ওনাকে (ছালেহ) দায়িত্ব দিয়েছেন।
আশা করি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা আসবে।’
এ বিষয়ে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিবের সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে কত দিন লাগবে- তা বলা যাচ্ছে না। সবাই মিলে কাগজপত্র দেখছেন, দেখা যাক।’
প্রসঙ্গত, সিসিক’র নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্যানেল মেয়র-১ কে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয় মন্ত্রণালয়।
কিন্তু প্যানেল মেয়র-২ ছালেহ আহমদ চৌধুরী নিজেকে মেয়র দাবী করায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে উভয়পক্ষের কাউন্সিলরদের এক বৈঠকে ‘আপাতত’ ছালেহ আহমদ চৌধুরীকেই ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়।