সিলেট৭১নিউজ::সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের বিভাগীয় সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে উগ্র মৌলবাদ এখন একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা। এই মৌলবাদ চরমবাদে এবং চরমবাদ জঙ্গিবাদে রূপ নিচ্ছে। ইতোপূর্বে আইএসআই এই উপমহাদেশে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র গঠনের হুমকি প্রদর্শন করে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। জেলা কমিটির সিনিয়র সদস্য এনামুল মুনীরের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্বা সন্তান কমান্ড সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক জবরুল হোসেন এর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দেবব্রত রায় দিপন।
বক্তারা বলেন,৩০ লক্ষ মানুষের জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যূদয় হয়েছিল সব মানুষের রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে। বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র – এই চারমূলনীতি সামনে রেখে ১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের নিপীড়ন, বৈষম্য, শোষণ, গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে লড়াই ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ স্বাধীনতার কয়েক বছর পরই পাকিন্তানী ভাব ধারায় হাঁটতে শুরু করে এবং এই হাটা এখনও অব্যাহত রয়েছে। বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ হয়েছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা রবদলে সংবিধানে বিসমিল্লাহ সংযোজন; পরে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম করা, সমাজতন্ত্র কার্যত বাদ দেয়া এবং গণতন্ত্র শুধুমাত্র সংবিধানেই আছে, বাস্তবে এর অনুশীলন কিংবা প্রয়োগ নেই বললেই চলে।
বক্তারা বলেন,মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা এবং জঙ্গীবাদ একসাথে চলতে পারে না। আজ দু:খ হয় স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের জনগণকে লড়তে হচ্ছে একটি অসাম্প্রদায়িক, সার্বজনীন ও বিজ্ঞানভিক্তিক শিক্ষাব্যবস্থার জন্য। দেশে আজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমছে, অপরদিকে এবতাদিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী বাড়ছে। হেফাজতের পরামর্শে পাঠ্য পুস্তকে পরিবর্তন এনে মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষাকে প্রায় একই জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে।
বক্তারা জঙ্গীবাদ মোকাবেলা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র প্রতিক্রিয়াাশীল চিন্তা ও শক্তির প্রসার ঘটেছে। সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার আহবান জানান।
সিলেট বাউল কল্যান ফাউণ্ডেশন এর বাউল শিল্পীদের অংশগ্রহণে সমাবেশের শুরুতে দেশাত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সভায় ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জেলা সন্তান কমান্ড সম্পাদক জবরুল ইসলাম।
সভায় বক্তব্য রাখেন,সংগঠনের সিলেট জেলা সাবেক আহবায়ক মুকির হোসেন চৌধুরী, জেলা সদস্য সচিব সন্দিপন শুভ, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য ফজলুর রহমান, কলেজ শিক্ষক পরিষদের সিলেট জেলা সভাপতি জ্যোতিশ মজুমদার, প্রাবন্ধিক আবদুল হক, ছড়ামঞ্চ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক বাদশাহ গাজী,স্মৃতিমেলা এর সমন্বয়ক আলী আখতারুজ্জামান বাবুল, জয়বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি ছড়াকার অজিত রায় ভজন,শিক্ষক,সংগঠক ও নারী নেত্রী রীনা কর্মকার, কবি ছয়ফুল আলম পারুল, নিচসা এর কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিশু, রোটারিয়ান মোসাদ্দেক সাজুল, প্রভাষক মিহির মোহন, হৃদবন্ধন সাহিত্য পরিষদের সভাপতি হিমাংশু রায় হিমেল, অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য আশীষ দে, স্বর্ণালী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি নুরুদ্দিন রাসেল,কবি কামাল আহমদ, সাংস্কৃতিক কর্মী এস এম শিহাব,
সাংবাদিক তাহের আহমদ, পিংকু দাস, নারী উদ্যোক্তা রুমা চৌধুরী, লিমন তালুকার,শাহনাজ বেগম ও গীতিকার কুবাদ বখত প্রমুখ।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর