জাকির হোসেন সুমন: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন নগরী জাফলং থেকে একটি সংকটাপন্ন লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকার একটি বাড়ি থেকে লজ্জাবতী বানরটিকে উদ্ধার করা হয়।উদ্ধার অভিযানে জাফলং বন বিভাগের বনবিট কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল’র নেতৃত্বে বনবিভাগের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায় মঙ্গলবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন, কয়েকদিন থেকে জাফলং গুচ্ছগ্রাম এলাকায় জনৈক সাত্তার মিয়ার বাড়িতে একটি লজ্জাবতী বানর আটকে রাখা হয়েছে। খবর পাওয়ার পরই তাঁরা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁকে বুঝিয়ে বানরটি ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি।
এরপর ছাত্তার মিয়াকে জানানো হয় প্রচলিত বন্য প্রাণী আইনে যেকোনো বন্য প্রাণী পালন, ধরা, হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ। এরপরও সাড়া না মিললে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিনকে অবগত করে জাফলং বনবিট কর্তৃপক্ষ লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করে।
বন্য প্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা গেছে, লজ্জাবতী বানর লাজুক বানর নামেও পরিচিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। এটি দেশের ক্ষুদ্রতম বানর জাতীয় প্রাণী।
বাংলাদেশে, মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এগুলো নিশাচর ও বনের গভীরে উঁচু গাছে থাকতে পছন্দ করে। দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে ঘুমিয়ে কাটায়। বিরল,নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনে সহজে চোখে পড়ে না। এগুলো গাছে গাছেই থাকে এবং সহজে মাটিতে নামে না। অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাফেরা করে। এগুলো সাধারণত ফল,পাতা, উদ্ভিদের কষ বা নির্যাস ইত্যাদি খায়। মাঝেমধ্যে বড় কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম-ছানা, সরীসৃপও খেয়ে থাকে।
এ বিষয়ে জনৈক ছাত্তার মিয়া বলেন কয়েকদিন আগে আমার বাড়ির পাশের নারকেল গাছে বানরটিকে পেয়ে আমি ও আমার পরিবার লালন পালন করে আসছিলাম। আজ বন বিভাগ কতৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়ে বুঝিয়ে বললে বানরটি আমি তাদের হাতে তুলে দেই।
সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদ উদ্দিন দৈনিক তরুণ কণ্ঠ পত্রিকার রিপোর্টারকে জানিয়েছেন, বানরটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাণীটিকে পর্যবেক্ষণ করে যদি মনে হয় সুস্থ আছে। তাহলে খুব শিগ্রই অবমুক্ত করা হবে। নয়তো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবা দিয়ে সুস্থ হওয়ার পর অবমুক্ত করা হবে।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর