সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে বাংলাদেশেও কমবে। যুক্তি ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (০৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বন্ড লাইসেন্স অ্যাপ্লিকেশন মডিউলের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন আর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ছিলেন বিশেষ অতিথি।
হঠাৎ জ্বালানি তেলের এত বেশি মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা কী—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আশপাশের দেশগুলোর কী অবস্থা? এখানে যে দাম বাড়ানো হয়েছে, তা যুক্তি (লজিক) ছাড়া বাড়ানো হয়নি। বারবার বলা হচ্ছে, দাম বাড়ানোর সময় জনগণের প্রতি আমাদের লক্ষ্য থাকে। কতটুকু সহ্য করতে পারবে মানুষ, এটা বিবেচনায় থাকে।’ তবে যুক্তিগুলো কী, তা আর উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে দেশে ভোক্তারাও তার সুফল পাবেন। সারা বিশ্বে এখন দাম কমে আসছে। সব জায়গায় কমা শুরু হয়েছে। আমরাও কম দামে কেনা শুরু করেছি। এগুলো যখন দেশে এসে পৌঁছাবে, তখন চাপ থাকবে না। আমি মনে করি দেশের ভোক্তারা কম দামে জ্বালানি তেল ব্যবহার করতে পারবেন।
জ্বালানি তেলের দামের হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা চালু করা হবে কি না, জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এ মুহূর্তে সেটা বলতে পারব না। তবে আমরা এলপিজি গ্যাসের মূল্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারণ করছি। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রেও আস্তে আস্তে তা চালু হবে।
এদিকে আরেকটি অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম জানান, দামের চাপ কমাতে তেলের ওপর কর কমানো হবে কিনা এখনও তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রোববার (৭ আগস্ট) সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
হঠাৎ করেই শনিবার থেকে বাড়ানো হয় জ্বালানি তেলের দাম। লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা থেকে ৪৬ টাকা রেকর্ড দাম বাড়ানোর চাপে সাধারণ মানুষ। আলোচনা সমালোচনায় টক অব দ্য কান্ট্রি এখন তেলের দাম। শুধু বেশি দামে তেল কেনা নয়, এরইমধ্যে জীবনযাত্রায় সবক্ষেত্রে ব্যয়বৃদ্ধির চাপে মানুষের মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে এখন জ্বালানি তেল।
আমদানি করা পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেলে বা দেশে সরবরাহ সংকট থাকলে কর কমিয়ে বা প্রত্যাহার করে সহনীয় দামে সরকার জনসাধারণকে স্বস্তি দেয়। জ্বালানি তেলের নতুন দামের হিসাবে দেখা যায়, বিপিসি পরিশোধন পর্যায়ে ডিজেলে প্রতি লিটারে ১৩ টাকা ৯০ পয়সা মূল্য সংযোজন কর দেয়, ব্যবসায়ী পর্যায়ে রাজস্ব দিতে হয় আরও ২ টাকা ২৪ পয়সা, সর্বোচ্চ অকটেনে দেয়া হয় ১৬ টাকা ৩০ পয়সা ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ২ টাকা ৬৫ পয়সা।
কর হার কমানোর কোনো চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান জানান, এখনও কোনো আলোচনা হয়নি।
এসময় জ্বালানির দাম বৃদ্ধির চাপ অর্থনীতি সামাল দিতে পারবে বলে মনে করেন চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান। কর জাল বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর-