কে.এ.রাহাত-গোয়াইনঘাট- সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যেন অনিয়ম অব্যবস্থাপনার নাম। পরিণত হয়েছে দুর্নীতির আখড়ায়। অফিসের রক্ষিত সরকারের বরাদ্দকৃত সম্পদ চুরিও করা হয় রীতিমতো। শিক্ষকদের নানা কাজেও করা হয় হয়রানি, দীর্ঘদিন থেকে চুরিসহ অনিয়মের ঘটনা ঘটে আসলেও কেউ কোন ব্যবস্থা নেয়না।
অফিস সহায়ক কিংবা হিসাব রক্ষকের কাছে গোদামের সংরক্ষিত বইয়ের কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। অফিস গোদাসহ জরুরি ফাইল সংরক্ষিত করে রাখা আলমারির চাবিও থাকে অফিসের জন্য নিযুক্ত নৈশপ্রহরীর কাছে।
এই সব অনিয়ম দেখার কেউ নেই। দেখার দায়িত্ব যাদের তারাই ত জড়িত। যারা কর্মরত রয়েছেন অনেকেই পনেরো থেকে ষোল আবার কেউ আছেন একটানা বিশ থেকে পচিশ বছর। এদের হাত ধরেই দীর্ঘদিন থেকে বই চুরিসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনা ঘটে থাকে।
শিক্ষকদের বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ, পেনশন ফাইল ডিলিংয়ে অনৈতিক সুবিধা আদায়, হয়রানিও করেন রীতিমত। তাই এই অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ভালো। আর এ কারণে অবৈধ খাতের ভাগবাটোয়ারাও হয় সুশৃঙ্খলভাবে। বিশেষ করে এই অফিসের কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডায়রিতে বদলী নামক শব্দটাই যেন নাই বললেই চলে।
অনুসন্ধানে লোকালয় বেরিয়ে আসে গোয়াইনঘাট মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দুর্নীতির চিত্র। জানা জায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত মাধ্যমিকের সহস্রাধিক বইয়ের একটি চালান গভীররাতে গোয়াইনঘাট থেকে পিকআপ যুগে চুরি করে সিলেটের কাজির বাজারে বিক্রির সময় পুলিশ হাতেনাতে ধরে ফেলে বই চুর চক্রের হোতাকে। কথায় আছে চুরের দশ দিন” সাউদের একদিন”পাপ ছাড়েনা বাপকে।
গত শনিবার সকালে সিলেট নগরীর কাজিরবাজার এলাকায় গোয়াইনঘাট শিক্ষা অফিসের দেড় হাজার কেজি ওজনের (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির) পাঠ্যবই বিক্রির সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বইসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে। দেড় হাজার কেজি ওজনের বইগুলো রাখা হয়েছে সিলেটের কোতোয়ালী থানায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার জানিয়েছেন, ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির এসব পাঠ্যবই গোয়াইনঘাট থেকে ২৭ হাজার টাকায় কিনেছেন তিনি। বইগুলো বিক্রি করেছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী শাহাবুদ্দিন। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী শাহাবুদ্দিনকেও আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সিলেটের মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৭৯ তাং ৩০/০৭/২২ইং।
নিজেদের বইয়ের গোদাম থেকে বই চুরির ঘটনার বিষয়ে গোয়াইনঘাটের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার শ্যামল কুমার রায়ের কাছে মোঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একটি মিটিং আছি, কিছুক্ষণ পরে কল করুন। তার আর ফোন রিসিভ করেন নি।
গোয়াইনঘাটের ইউএনও তাহমিলুর রহমান বলেন,এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে, এবং তদন্ত চলছে। এর সাথে জড়িতদের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর