সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি;: সুনামগঞ্জে দ্রুত বাড়ছে নদ নদীর পানি। মঙ্গলবার পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বুধবার বিকেল থেকে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলাসহ, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুর, শান্তিগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে প্রবল বাতাসে অনেক ঘরবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। জামালগঞ্জ-কাঠইর সড়কের উজজ্জ্বলপুর এলাকায় সড়ক পানি উঠার সাথে ঝুঁকি রয়েছে ভেঙ্গে যাবারও। এদিকে বুধবার দুপুর থেকে সিলেটসহ সারা দেশের সাথে ছাতকের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নতুন করে ডুবছে সড়ক, ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি এলাকা, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, নবীনগরসহ কয়েকটি এলাকার নিচু এলাকা ও সড়ক প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার পৌর নাগরিক।
শহরের উকিল পাড়ার বাসিন্দা ইউসূফ আলী বললেন, বুধবার ভোররাতে রান্নাঘরে পানি প্রবেশ করার সকাল থেকে রান্নাবান্না হয় নি। সারাদিন শুকনো খাবার খেয়ে আছি।
ষোলঘরের বাসিন্দা কল্পনা রানী বললেন, ঘরে পানি উঠায় খাট উঁচু করে থাকছি। টিউবওয়েলও ডুবে গেছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া নোয়াগাঁও এলাকার কাহার মিয়া বললেন, একমাস যায় নি, আরেক দফায় বাড়ির উঠোনে পানি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডেন নির্বাহী প্রকৌশলী-২ শামসুদ্দোহা বলেন, বুধবার বিকালে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর যাচ্ছে। তিনি জানান, বুধবার সুনামগঞ্জে ৫১ মিলিমিটার এবং তাহিরপুরের লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা ডুবন্ত সড়ক প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আমরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত আছি।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে পানি দ্রুত বাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলায় জিআরের ২০ টন করে চাল পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ আনুষঙ্গিক সব কিছুরই মজুদ আছে। তবে দুর্যোগ হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, চলমান বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকবে। এই মাসে ৮১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের মধ্যে ৬৮৭ মিলিমিটার হয়েছে। এই কয়েকদিনে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা ১৯ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান