সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক করার পর রিং বসানোর ৭২ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে তার শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি। চিকিৎসকেদের এই অভিমতের প্রেক্ষিতে তিনি এখন অনেকটা ‘ঝুঁকিমুক্ত’ বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা। তবে, বয়স ও অন্যান্য রোগ বিবেচনায় নিলে তিনি কতক্ষণ ‘ঝুঁকিমুক্ত’ থাকবেন, তা নিয়ে চিন্তিত তারা।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাপ্তাহিক ভার্চুয়াল বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, বৈঠকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। চিকিৎসকরা মনে করছেন, ম্যাডামের হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী যে ঝুঁকিটা তৈরি হয়েছিল, সেটা হওয়ার সম্ভাবনা এখন অনেকটা কম। চিকিৎসকরা তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত হলেও সেটা কত সময়ের জন্য তা বলা মুশকিল। কারণ, ম্যাডামের তো অনেকগুলো শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তিনি ডায়াবেটিক, ফুসফুস জটিলতা, লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত। সে কারনে চিকিৎসকরা তাকে চব্বিশ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।’
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘ম্যাডামের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, তিনটা ব্লক ধরা পড়েছে। তার একটায় রিং বসানো হয়েছে। উনার যে শারীরিক অবস্থা, নতুন করে রিং বসানোর মতো অবস্থায় তিনি আছেন কি না সেটা নিয়ে চিকিৎসকরা চিন্তিত।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যের আলোচনায় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রায় সবার মত হলো, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে নতুন করে আবেদন করে কোনো লাভ নেই। কারণ, সরকার চায় না তার বিদেশে চিকিৎসা হোক। আর আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে। ফলে, সেখানে গিয়েও কোনো লাভ নেই। তাই বিএনপিকে এই অবস্থা মেনে নিতেই হবে।
এ বিষয়ে সেলিমা রহমান বলেন, ‘সরকার তো ম্যাডামকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। দেবে বলে মনেও হয় না। আমরা বারবার বিদেশে তার চিকিৎসার কথা বলে আসছি। এখন নতুন করে কী করা যায়, সেগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। দেখা যাক কী হয়।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন গভীর রাতে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। পরে সকালে তার এনজিওগ্রাম করে হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়লেও একটিতে রিং বসানো হয়। বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান