নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : নবীগঞ্জে জায়গা দখলে ব্যর্থ হয়ে সংখ্যালগু এক পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতর্কিত হামলার ঘটনায় ওই পরিবারের মহিলাসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতেরা বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৩ জুন) বেলা দুইটায় নবীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নের তারালিয়া গ্রামে।
হামলাকালীন পরিবার সদস্য সুচিত্র গোপ ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাযায়, দীর্ঘদিন থেকে গ্রামের সুধীর গোপের জায়গা দখলের চেষ্টা চালায় একই গ্রামের মৃত বতই মিয়ার পুত্র আবদুর রহিমসহ একটি ভূমি খেকোচক্র। এই চক্রের সদস্যরা হলেন, রামলৌহ গ্রামের কনর মিয়া, মোজাহিদ আলী, শফিক মিয়া ও জহুরুল হক। এর আগেও এই চক্রের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কিন্তু ডায়েরি পরবর্তীও থেমে থাকেনি এই চক্রের দখল প্রচেষ্টা। এমনকি জায়গা ছেড়ে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকী প্রদান করে রহিম উদ্দিন গ্যাং।
এরই ধারাবাহিকতায় গেল শুক্রবার আবদুর রহিম সদলবলে বাড়ি এসে গৃহকর্তা সুধীর গোপকে নাম ধরে ডাকতে থাকে। ডাক শোনে সুধীর গোপের ছেলে শুভ্র গোপ বাহিরে আসলে সাথে থাকা লোকজনসহ রহিম উদ্দিন শুভ্র গোপের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় সুধীর গোপ ও সীতারানী গোপকেও মারাত্বকভাবে আহত করা হয়।
সুধীর গোপের ছেলে সুচিত্র গোপ বলেন, রহিম গ্যাংদের বিষয় অবগত করে বিগত দিনে জেলা পুলিশ সুপার, বিভাগীয় কমিশনার সবাইকে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তার উপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানও ভূমি খেকো চক্রের পক্ষে অবস্থান করছেন। এমনকি হামলাকারীরা ঘটনার দিন প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের নাম উল্লেখ করে বলে, ‘আমার চেয়ারম্যানের লোক’। এই অবস্থায় সংখ্যালঘু ওই পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। সুচিত্র গোপ বলেন, আমাদের লাঠির জোর নেই। আমরা নিরীহ ও সংখ্যালঘু শ্রেণীর লোক। তাই সুযোগ বোঝে রহিম গ্যাং জায়গা দখলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এই অবস্থায় আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ত্বড়িত হস্তক্ষেপ চাই।
এই ঘটনায় ভূমিখেকোদের পক্ষাবলম্বন করছেন ১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল। এমন অভিযোগ জানিয়ে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিচার চাই কিন্তু তালগাছ আমার-এই ভূমিকায় চেয়ারম্যানের ইন্ধনে শালিশ বৈঠক হলেও ঘটনার নিস্পত্তি হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নবীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডালিম আহমদ বলেন, মূলত এই দু’পক্ষের মধ্যে রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। এ ব্যাপারে স্থানীয় সালিশে একাধিকবার বৈঠক হলেও নিস্পত্তি হয়নি। তবে কোনো পক্ষ থেকে এখনও কোনো অভিযোগ থানায় পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।