সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: এখনও ভয়াবহ বন্যার দখল কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেটবাসী। এরমধ্যে বৃহস্পিতবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে। এতে সিলেটে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে চলতি মাসে স্বল্পমেয়াদী বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি জানান, ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহও বয়ে যেতে পারে এ মাসে।
গত মাসেই সিলেটে সাম্প্রতিককালের ভয়াবহতম বন্যা হয়। ১১ মে থেকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তলিয়ে যায় নগরীর বেশিরভাগ এলাকাসহ ১২ টি উপজেলা। এই বন্যার ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেটবাসী। বন্যায় বিপর্যস্ত হয় মানুষের জীবন। ভেসে যায় খামারের মাছ, ভেঙে যায় সড়ক, বাঁধ, ঘরবাড়ি। ক্ষতি হয় শত শত কোটি টাকার। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ফের বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া গেল।
আজিজুর রহমান জানান, চলতি মাসের প্রথম দশ দিনে সারাদেশে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বা বর্ষার বিস্তার বিস্তার ঘটতে পারে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে; এর মধ্যে একটি মৌসুমী নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
এদিকে শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে- দেশের সব বিভাগে বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে বৃষ্টির প্রবণতা অঞ্চলভেদে কম-বেশি হতে পারে।
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরাঞ্চল ছাড়া সারাদেশে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের সব বিভাগেই বৃষ্টিপাত হয়েছে। এসময়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে ৬৭ মিলিমিটার। এদিনে ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২ মিলিমিটার। বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘ সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক স্থানে এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান হাফিজুর রহমান।
অন্যদিকে আবহাওয়ার সতর্কতা বার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সমুদ্র বন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান