সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: ‘আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা যৌথভাবেই নিজ নিজ জায়গা থেকে আন্দোলন শুরু করবো। আন্দোলন যুগপত হবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ধারা নির্ধারিত হবে যে শেষ পর্যন্ত সেটা কিভাবে রুপ নেবে।’
বুধবার (০১ জুন) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধাণ সম্পাদক সাইফুল হক।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো একজোট হয়ে কাজ করলে আমরা অবশ্যই এই দুঃশাসনকে পরাজিত করে জনগণের বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হবো। মানুষ দেখতে চায়, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে ঐক্যবদ্ধ আছে। এই দুঃশাসন থেকে রেহাই পাবার জন্য বিরোধী দলগুলোকে জনগণের পক্ষে একটা কার্যকর ঐক্য দেখতে চায়।’
‘আজকে আলোচনায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে আন্দোলনের ব্যাপারে বিএনপির মধ্যে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটাকে আমরা আরও জোরদার করবো এবং আন্দোলনকে আরও সমন্বিত করবো।’— বলেন সাইফুল হক।
এই নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণআন্দোলন ও গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, তদারকির সরকার, অবাধ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হবে। সে কারণেই আমরা আলাপ-আলোচনা করে আন্দোলনে ঐক্যমত হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশবাসীকে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, আজকে বিরোধী দলগুলো যে উদ্যোগ নিয়েছে মানুষ তার নিজ নিজ জায়গা থেকে এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়াবেন এবং তারা আন্দোলনের সাথী হবেন।’
সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মতামত তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, ‘শুধুমাত্র সরকার পরিবর্তনের জন্য আমাদের এই আন্দোলন নয়। পুরো রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, পরিবর্তন, একই সাথে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কারসহ এখানে রাষ্ট্র প্রশাসনের গণতান্ত্রিক যে সংস্কার এবং আমাদের এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্র যেভাবে নাগরিকদের ওপরে একটা সহিংস ভূমিকায় আবির্ভুত হয় এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে যেভাবে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়-এই জায়গাগুলোর ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। আজকের আলোচনায় সংকট উত্তরণে আমাদের দলেরে ৩১ দফা বিএনপির নেতৃ্বৃন্দের কাছে পেশ করেছি।’
এই প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেসব সংস্কারের কথা সাইফুল হক বলেছেন, আমরাও যে সমস্ত কথা বলছি। এই সব সংস্কার বিষয়ে আমরা আরও বিশদ আলোচনা করবো এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারেও আমাদের যৌথভাবে বক্তব্য নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হবো।’
আলোচনার বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছান আলী দুলাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, মাহমুদ হোসেন ও এ্যাপেলো জামালী।
গত ২৪ মে বিএনপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের ঐক্য গড়ে এই সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়। ২৪ মে তারা নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে এবং ২৭ মে ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের লেবার পার্টির সাথে সংলাপ করেছে বিএনপি। গতকাল সংলাপ করেছে গণসংহতি আন্দোলনের সঙ্গে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান