সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি;: সুনামগঞ্জে বন্যায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় ২৭২ কিলোমিটার সড়ক, তিনটি সেতু ও একটি রাবার ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ৯০ কোটি টাকার প্রাথমিক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ও দোয়ারাবাজার উপজেলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেসে গেছে। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার একটি রাবার ড্যামের দুই দিকের রাস্তাসহ অফিস ঘর ঢলের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। তবে সড়কের বেশি ক্ষতি হয়েছে ছাতক ও দোয়ারা উপজেলায়। এ দুটি উপজেলা এবারের বন্যায় বেশি আক্রান্ত হয়েছিল। তাই ক্ষয়-ক্ষতিও হয়েছে বেশি।
দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বশির উদ্দিন বলেন, ঢলের পানি হাওড়ে নেমে এসে যখন সড়কের একপাশে অনেক উঁচু হয়ে যায়, ওই সময় কয়েকজন এসে বললেন, রামপুর সেতুর পাশে সড়কে ফাটল দেখা দিছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ওখানে পৌঁছাই, ওখানে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই চোখের সামনে নিমিষেই প্রবল স্রোতে সেতুটি ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
রামপুর সেতুটি ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলার সাথে দোয়ারাবাজারবাসীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেতুটি নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত দোয়ারাবাজারের লাখো মানুষের ভোগান্তি হবে। এ সেতু দিয়ে ছাতকের মানুষজনও সুনামগঞ্জে যাতায়াত করতেন। সেতুটি দ্রুত পুনর্নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সিরাজ মিয়া বলেন, ছাতক শহর ও শহরতলিতে এমন বন্যা কয়েক যুগের মধ্যে দেখিনি। আমাদের স্বস্তি যে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আরও দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হলে আমাদের দুর্ভোগ চরমে ওঠতো। তারপরও এ বন্যায় ঢলের পানিতে আমাদের রাস্তাঘাটের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। এখন ভাঙা রাস্তায় চলাচল কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাদেরটেক থেকে সোনাপুর পর্যন্ত রাস্তার বেহাল অবস্থা। রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে একদম চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। নিত্যদিনের যাতায়াত খুবই কষ্টকর হয়ে উঠেছে স্থানীয় মানুষজনদের। চালবন্দ-ভাদেরটেক সড়কের ৫টি স্থান সম্পূর্ণ ধসে গেছে। রাস্তাটি বিলীন হওয়ার পথে। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই নাজুক। এগুলো দ্রুত মেরামত করা জরুরি।
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুল আলম বলেন, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সড়ক ও সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রিসেন্ট বন্যায় ২৭২ কিলোমিটার সড়ক এবং তিনটি ব্রিজ কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ৯০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির আসল চিত্র পাব সব জায়গা থেকে পানি একবারে নেমে গেলে। এবারের বন্যায় এলজিইডির অধীন সড়ক ও সেতু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান