সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: সিলেটে একদিনে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী ও এক শিশুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।এরমধ্যে ট্রাক চাপায় শিশু ও এক মোটরসাইকেল আরোহী, বাস চাপায় একজন এবং লেগুনার সঙ্গে সংঘর্ষে আরেক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের নগরীর আখালিয়া এলাকায়, সিলেট-তামাবিল সড়কের জৈন্তাপুরে, ওসমানীনগরের গয়াইনঘাটে এবং সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে এম সাইফুর রহমান কলেজের সামনে পৃথক দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, রোববার রাত সাড়ে ১০টার নগরের মদিনা মার্কেট আনসার ক্যাম্পের সামনে পাথরবাহি ট্রাকের ধাক্কায় ফয়জুর রহমান (২২) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। পেশায় ব্যবসায়ী নিহত ফয়জুর রহমান সিলেট সদর উপজেলার সোনাতলা সাদিপুর গ্রামের মৃত কুতুব উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাফলং থেকে ছেড়ে আসা পাথরবাহি একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্টো ট-২০-০৩৬৮) মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকের নীচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে ওই যুবক মারা যান। ঘটনার পর পরই ট্রাক চালককে আটক করেন জনতা। বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে এসএমপির জালালাবাদ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং ট্রাক চালককে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
নিহতের ভগ্নিপতি আবদুর রহিম বলেন, তার শ্যালক নগরীর আম্বরখানা শামস সুপার মার্কেটে কুতুব বস্ত্র বিতান নামে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ঘটনার সময় তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের সঙ্গীয় অপর আরোহী আহত হন।
একইদিন বিকেলে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর পাখিটিকি নামক ঘটে আরেক দুর্ঘটনা। লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে রাশেদ আহমদ (২২) নামের এক যুবক ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হন অপর মোটরসাইকেল আরোহী। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। রাশেদ আহমদ সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা।
রোববার ভোরে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ওসমানীনগর উপজেলার গয়নাঘাটে হানিফ পরিবহনের চাপায় আবদুল্লাহ আল মামুন হাওলাদার (২৫) নামে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন। তিনি পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানার নদমোল্লা গ্রামের বাদল হাওলাদারের ছেলে। দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে থাকা মিরাজ হোসেন (৩০) নামে আরেক যুবক আহত হন। তাকে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর বাস চালককে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সিলেটগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো: ব-১৫-৬৬৫৬) মোটরসাইকেলটিকে পেছন দিক থেকে চাপা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে মামুন হাওলাদারকে মৃত ঘোষণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আর গুরুত্বর আহত মিরাজ হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হতাহতরা স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ঠিকাধারীর কাজ করতেন জানিয়েছে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার এটিএসআই বিধু ভূষন দাস বলেন, দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পড়ায় বাসটি ঘটনাস্থলেই আটকে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাস চালককে আটক করে। আটক বাস চালক আমিরুল ইসলাম চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার আলীনগর মাঝপাড়া গ্রামের মৃত ইকদিল হোসেনের ছেলে।
এদিকে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রাক চাপায় ফরিদা (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের এম সাইফুর রহমান কলেজ পয়েন্টে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু বুড়দেও গ্রামের ফিরুজ মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ঘাতক ট্রাকটি (ঢাকা মেট্রো ট-১৬-৭৪৩১) আরেকটি ট্রাককে অতিক্রম করতে গেলে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুটিকে চাপা দেয়। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কতৃব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করে। ঘটনার পর কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ট্রাকটি জব্দ করেছে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান