এসবিএনঃ জমিয়তে উলামা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় আমীর, শায়খুল হাদীস আল্লামা আলিমুদ্দীন শায়খে দুর্লভপুরী বলেছেন, শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত সর্বসম্মত একটি বিষয়।
এ নিয়ে বিতর্কের কোন সুযোগ নেই। বর্তমানে মুখোশধারী একটি মহল নতুন করে অহেতুক এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে প্রকৃতপক্ষে দেশে বিভ্রান্তি, অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। দুর্লভপুরী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার কোন ষড়যন্ত্র এদেশের মুসলমান বরদাশত করবে না।
তিনি আরো বলেন, জমিয়তের নীতি ও ইসলামী মূল্যবোধ আদর্শকে জলাঞ্জলী দিয়ে জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ কোন রকম রাজনৈতিক জোটকে সমর্থন করবেনা। দুর্লভপুরী বলেন, আমাদের মধ্যে একটি মহল যখন নারী নেতৃত্ব এবং মওদূদীবাদের সাথে সখ্যতা গড়তে শুরু করলেন তখন আমরা সকল বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে দ্বীন ইসলাম ও দলীয় নীতি ও আদর্শকে লালন করার মানসে ২০১০ ঈসায়ী সিলেটের প্রায় পাঁচশত বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে “আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাত অর্থ্যাৎ জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ” গঠন করি।
আল্লামা আলিমুদ্দীন দুর্লভপুরী বলেন, জমিয়তে উলামা গঠনের উদ্দেশ্য হল শিয়াবাদ, লা মাযহাবি, কাদিয়ানী, মওদূদীবাদ ও নারী নেতৃত্বসহ সকল প্রকার বাতিল মতবাদ থেকে মুসলমানদের রক্ষা করার দ্বারা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
দুর্লভপুরী বলেন, আমরা ২০০১ সালের নির্বাচন থেকে “জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের” রাজনীতির সাথে জড়িত নই। যারা দলীয় প্রতিক বিসর্জন দিয়ে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে তাদের সাথে ঐক্যগড়ার প্রশ্নই আসে না। দুর্লভপুরী বলেন, জমিয়তের মতো আলেম-উলামার সংগঠনের জন্য ইহা অত্যন্ত লজ্জাজনক।
তিনি গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় সিলেট রেজিষ্টারী মাঠে জমিয়তে উলামা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত রুখো সন্ত্রাস বাঁচাও ঈমান বাঁচাও দেশ, জঙ্গিবাদ মুক্ত থাকুক মোদের স্বাধীন বাংলাদেশ ইসমতে আম্বিয়া ও আদালতে সাহাবা মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যদানকালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
জমিয়তে উলামার কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি মহাসমাবেশের প্রধান বক্তা অধ্যক্ষ মাওলানা শফীকুল হক শায়খে আমকুনী বলেন, একটি চিহ্নিত মহল ক্বওমী মাদ্রাসা সমূহে জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাসবাদের গন্ধ খুজে পায়। আলহামদুলিল্লাহ !
বর্তমানে সরকার নিজেই বলছে ক্বওমী মাদ্রাসা সন্ত্রাসবাদের প্রজনন কেন্দ্র নয়। এজন্য সরকার বাহাদুরকে সাধুবাদ জানাই। আমকুনী বলেন, সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের এদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নামে তথাকথিত গুটিকতেক বিধর্মী ইসলাম ধর্মের ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে আস্ফালন করার দু:সাহস করে কেন? তা সরকারকে তদন্ত করতে হবে। তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের জনগণকে গরু জবাই না করার পরামর্শ দিচ্ছে। এদের অহেতুক আস্ফালনকে বন্ধ না করলে সরকারকে সকল পরিস্থিতির জন্য দায়ী থাকতে হবে।
মাওলানা আমকুনী বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী, দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় জমিয়তে উলামার বিকল্প নেই।
মহাসমাবেশের শুভ উদ্বোধন করেন জমিয়তে উলামার প্রধান উপদেষ্টা খলিফায়ে বায়মপুরী, শায়খুল হাদীস আল্লামা মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস শায়খে লক্ষিপুরী।
জমিয়তে উলামা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ক্বারী হারুনুর রশীদ চতুলী, সিলেট জেলা জমিয়তে উলামার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল হোসেন চতুলী এবং মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাওলানা হাফিয আহমদ সগীরের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা মুফতী ইউসুফ শায়খে শ্যামপুরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান শায়খে রায়গড়ী, জমিয়তে উলামার সাবেক মহাসচিব মাওলানা শামসুদ্দীন দুর্লভপুরী, মাওলানা মুফতি রশিদ আহমদ, জমিয়তে উলামার কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা নযরুল ইসলাম তোয়াকুলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুখলিসুর রহমান রাজাগঞ্জী, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মালিক মোবারকপুরী, মাওলানা হাফিয হারুনুর রশিদ উজানীপাড়ী, মাওলানা কাওছার আহমদ, মাওলানা মুবাশ্বির আলী, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা আজমত উল্লাহ, মাওলানা মঈন উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল জব্বার, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা গোলাম ওয়াহিদ, মাওলানা আবু বক্কর, মাওলানা আব্দুল করিম, জননেতা এড. মুহাম্মদ আলী, মাওলানা আব্দুল হালিম, সিলেট মহানগর কমিটির সভাপতি মাওলানা তহুরুল হক জকিগঞ্জী, মাওলানা আব্দুল্লাহ বাহার, মাওলানা হাফিয সৈয়দ আলী আহমদ, মাওলানা বদরুল আলম, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা শফিকুর রহমান, মাওলানা আব্দুল লতিফ, মাও. আব্দুল মোমিন, মাও. মাসুক আহমদ, মাও. আব্দুল্লাহ শাকির, মাও. নুরুল ইসলাম, মাও. আব্দুল মালিক, মাও. জামাল আহমদ, মাও. লুৎফুর রহমান, মাও. আশিকুর রহমান, জমিয়তে তালাবার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাও. জয়নুল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক মাও. হারিছ উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মাও. বদরুল ইসলাম আল ফারুক, হাফিয আরিফ রব্বানী, ছাত্রনেতা গোলাম মওলা নয়ন, জাকির হোসেন, রফি উদ্দিন শাহীন, সিদ্দিক বিন মোহাম্মদ, আসাদ আহমদ প্রমূখ।
মহাসমাবেশের প্রস্তাবাবলী পেশ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মাওলানা নযরুল ইসলাম তোয়াকুলী।
মহাসমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যানারে সিলেট নগরীতে এক বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিন্দাবাজার পয়েন্টে এসে শেষ হয়।