জৈন্তাপুর প্রতিনিধি;: টানা বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদিতে পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে জৈন্তাপুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। নদীতে পানির ¯্রােত বেশি থাকায় নৌকা ডুবে এক পাথর শ্রমিক নিখোঁজ, শিশু সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উদ্ধার করা হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে বিস্তির্ণ ফসলি জমি। বিভিন্ন গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত তিন দিনের টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট এবং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ এখন পানিবন্দি।
বেশির ভাগ রাস্তা পানির নিচে থাকায় বিভিন্ন গ্রাম সহ উপজেলার সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে ঘটে গেলো নৌকা ডুবির ঘটনা। শুক্রবার (১৩ মে) সকাল ১০টায় উপজেলার ২নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের মুক্তাপুর গ্রামের পাথর শ্রমিক আলমগীর হোসেন দুই শিশু ছেলে ও এক ভাতিজাকে একটি ছোট নৌকায় করে পার্শ্ববর্তী বাড়ি যাচ্ছিলেন। এমন সময় বড়গাং নদীর বুদাইর ভাঙ্গা নামক স্থানে প্রবল ¯্রােতে নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় তাদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায় এবং শিশুগুলোকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও দ্রুতগতির পানির স্রোতে আলমগীর হোসেন (৩২) কে সবার আড়াল করে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের লোকজন এবং উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ি দল দিনভর উদ্ধার তৎপরতা চালায়। কিন্তু বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকা ব্যাপক তল্লাশি করেও আলমগীর হোসেনের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক নিখোঁজ আলমগীর হোসেনের মরদেহ উদ্ধার তৎপরতা দেখতে নৌকা যোগে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম, জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার। এসময় তারা নিখোঁজ আলমগীরের বাড়ীতে যান এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ি দল উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিলেট তালতলা ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার শহিদুল ইসলাম।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান