সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: মহামারি করোনার সংকট কাটিয়ে এবার সিলেটের পর্যটনে সুদিন ফেরার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এবার সিলেটমুখী হচ্ছেন পর্যটকরা।
মহামারি করোনার সংকট কাটিয়ে এবার সিলেটের পর্যটনে সুদিন ফেরার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এবার সিলেটমুখী হচ্ছেন পর্যটকরা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ওলি-আউলিয়ার পুণ্যভূমি সিলেট দেশি-বিদেশি পর্যটকের আকর্ষণের অন্যতম স্থান। বছরজুড়ে সিলেটে পর্যটকের আগমন ঘটে। শাহজালাল-শাহপরানের মাজার জিয়ারত, চা বাগান, সীমান্তবর্তী পাথর কোয়ারি, হাওড়, পাহাড়-টিলা আর ঝরনা পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কারণ।
বছরে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে সরকারি ছুটি হলেই জাফলং, লালাখাল, বিছানাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, রাতারগুল, লোভাছড়া, হামহাম জলপ্রপাত, মাধবকুণ্ডে এ সময় তিলধারণের ঠাঁই থাকে না। শ্রীমঙ্গল ও সিলেটের চাবাগানগুলোতে প্রচণ্ড ভিড় থাকে।
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়া, মৌলভীবাজারের হাকালুকি, তাহিরপুরের টেকেরঘাটও পর্যটকদের পছন্দের মধ্যে অন্যতম।
ভ্রমণেচ্ছুকরা আবাসিক হোটেলগুলোতে অগ্রিম বুকিং করতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ কক্ষ এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী ৪ থেকে ৬ মে পর্যন্ত শহরের হোটেলগুলোর অর্ধেকের বেশি কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। এখনো অনেকেই বুকিং করছেন। বেশিরভাগ পর্যটকই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসছেন।
সিলেট হোটেল-মোটেল রেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমাত নুরী বলেন, সিলেট শহরকেন্দ্রিক হোটেল-মোটেলগুলোর অবস্থা ভালো। ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা সিলেট ঘুরে দেখার জন্য অগ্রিম বুকিং করে রাখছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় এবার হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা গত দুই বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশা করছেন বলে তিনি জানান।
হোটেল সুপ্রীমের ব্যবস্থাপক জানান, ঈদের পরবর্তী দুদিনের বুকিং বেশি। ৫০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। সময় যত যাচ্ছে বুকিং বাড়ছে। হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক শাফায়াত বলেন, এখনো হোটেলে ৬০ ভাগ বুকিং বাকি আছে। পর্যটকরা যোগাযোগ করছেন। অনেকে বুকিং দিচ্ছেন, আবার অনেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য নিচ্ছেন।
আম্বরখানা এলাকার ব্রিটানিয়া হোটেলের ব্যবস্থাপক (বিপণন) কাওসার খান বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। যারা অগ্রিম বুকিং করছেন, তাদের বেশিরভাগই সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি চাকরিজীবী। ঢাকায় একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন পলাশ আহমদ। তিনি সিলেটের একটি হোটেলে বুকিং নিয়েছেন।
পলাশ আহমদ বলেন, এবার ঈদের ছুটি কিছুটা লম্বা। এই সুযোগে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরে বেড়াতে আসব। সবকিছু ঠিক থাকলে ৪ মে সিলেটে পৌঁছে হোটেলে উঠব।
তবে শহরতলির রিসোর্টগুলোতে এখনো বুকিং কম। আকর্ষণীয় বিভিন্ন অফারের ঘোষণা দেওয়া হলেও পর্যটক টানতে পারছে না রিসোর্টগুলো। এবারের ঈদে গত দুই বছরের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার আশা করেছিলেন রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা।
সিলেটের নাজিমগড় রিসোর্টের মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয় ও বিপণন) খায়রুল আনাম বলেন, এখন পর্যন্ত রিসোর্টের প্রায় ৩০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। করোনার আগে এমন সময়ে রিসোর্ট জমজমাট থাকত।
সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, গত দুই বছর হোটেল ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আমরা আশা করছি এবার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব। অন্যান্য বছর লম্বা ছুটি পেলেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে সিলেট। এবার ঈদের ছুটিতে পর্যটক সমাগম অতীতের চেয়ে বেশি হবে আশা করছি। এতে হোটেল ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান