কুলাউড়া প্রতিনিধি;: কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে অবস্থিত সুলতানপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরোধপূর্ণ জমি রক্ষায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। স্কুলের সীমানা এলাকার ভিতরের একটি অংশে বসবাসরত একটি পক্ষের সাথে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে দখল পাল্টা দখল চলে আসছে। জমির মালিকানা দাবি করে একে অপরের বিপক্ষে সালিশ বৈঠক করেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন থেকে জমি নিয়ে জটিলতা থাকলেও উভয় পক্ষ ছাড় না দেওয়ায় বিষয়টি বর্তমানে আদালতে গড়িয়েছে। এছাড়া স্কুলের জমি রক্ষায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ দখল মুক্তকরনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদানসহ নানাভাবে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে রোববার বিকেলে বিদ্যালয়ের বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রতিপক্ষ কর্তৃক বেড়া দেওয়ার চেষ্টাকালে সুলতানপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন করে আপত্তি জানালে এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
দুপুর ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তিন ঘন্টাব্যাপি প্রায় চারশত শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে বিদ্যালয়ের জমিতে প্রতিপক্ষ কর্তৃক অবৈধভাবে বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগের প্রতিবাদে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। উত্তেজনার খবর পেয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে।
জানা যায়, ১৯৯১ সালে সুলতানপুর গ্রামের শিক্ষানুরাগী মেহেরুন্নেছা খাতুন চৌধুরী এলাকার নারী শিক্ষা বিস্তারে সুলতানপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য একশত তিন শতক জমি দান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ের নামে ঐ জমি রেকর্ড হয় এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ বিদ্যালয়টি ২০২০ সালে এমপিওভুক্ত হয় এবং প্রায় ৪৬৫ শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে একটি একাডেমিক ভবন অনুমোদন হয়। যে স্থানে নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সেই স্থানেই বিদ্যালয়ের ১০৩ শতক মোট জমির ১টি অংশে প্রায় ১৭শতক জমিতে মৃত রজব আলীর স্ত্রী সামিনা খাতুন গংরা পরিবারের ২০/২৫ জন সদস্যসহ দীর্ঘ দিন থেকে বসবাস করে আসছেন। ঐ ১৭ শতক জমি নিয়ে স্কুল এবং সামিনা খাতুন গং এর বিরোধ দীর্ঘ দিনের। যা নিয়ে একাধিক সমঝোতা বৈঠকে স্কুলের সীমানা এলাকা থেকে অন্যত্র সামিনা খাতুন গং কে সমঝোতার মাধ্যমে বিনিময় করে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিলে তা মানেন নি সামিনা খাতুন গংরা।
প্রধান শিক্ষক নাজমা চৌধুরী এবং দাতা পরিবারের সদস্য শিক্ষক আবু জাবেদ পাপ্পু বলেন, এ অঞ্চলের একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দিন থেকে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় চলছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়েছে এবং একটি নতুন ভবন অনুমোদন হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক ভবনের জন্য নির্ধারিত এই স্থানটি অবৈধভাবে একটি পক্ষ দখল করে রেখেছে। বিদ্যালয়ের এই ভবনটি নির্মাণ হলে শ্রেণি কক্ষের সংকট কমবে। দাতা ১০৩ শতক জমি স্কুলকে দান করেছেন যা আমাদের রেকর্ড রয়েছে। প্রতিপক্ষ বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করতে নানা অপপ্রচার চালা”েছ এবং শিক্ষার পবিবেশ নষ্ট করছে।
সিলেট৭১নিউজ/ইফতি রহমান