বড়লেখা প্রতিনিধি;: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রুবেল আহমদ (২৮) নামে এক যুবককে নৃসংশভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ৩১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) রাতেই নিহত রুবেলের ছোট ভাই ফয়ছল আহমদ বাদি হয়ে বড়লেখা থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বড়লেখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) সাবুল আহমদ ও তার ভাই সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবসহ ১৫ জনের নামোল্লেখ করে আরও ১৫-১৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি ককরা হয়।
এ মামলায় শুক্রবার রাতে পুলিশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন বড়লেখা সদর ইউপি’র কেছরিগুল গ্রামের সাইদুল ইসলাম, আজির উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান ও মাইজপাড়া গ্রামের সুহেল আহমদ।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, আসামীদের শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠনো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
থানা পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার জানায়, শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) জুমার নামাজের সময় বড়লেখা সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল জামে মসজিদে জনৈক জামাল আহমদের সঙ্গে বড়লেখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাবের কথা কাটাকাটি হয়। পরে এলাকার লোকজন বিষয়টি সমাধান করে দেন। আসরের নামাজের সময় জামাল আহমদের ছেলে ও ভাতিজাদের সঙ্গে সদর ইউপির মেম্বার সাবুল আহমদের ভাই সরফ উদ্দিন নবাবের ছেলে ও ভাতিজাদের ঝগড়া হয়। ঘটনার সময় রুবেল আহমদ কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে আটকে রেখে মারধর শুরু করেন ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ ও তার ভাই সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো কোপানো ও বেধড়ক পেটানো হয় রুবেকে।রুবেলকে বাঁচাতে গিয়ে তার ভাই সুমন আহমদও আহত হন। পরে স্থানীয়রা রুবেলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা মৌলভীবাজার জেনারেল সদর হাসাপাতালের মর্গে পাঠায়।এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। নিহত রুবেল সদর ইউপি’র কেছরিগুল গ্রামের মৃত ছয়েফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন।
নিহত রুবেলের চাচাতো ভাই এমরান আহমদ বলেন, তার চাচাতো ভাই রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। ঘটনার সময় তিনি কাজ শেষে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এসময় তাকে (রুবেলকে) জামাল আহমদের পক্ষের লোক ভেবে ধরে মারধর শুরু করেন ইউপি সদস্য সাবুল আহমদ ও তার ভাই সাবেক মেম্বার সরফ উদ্দিন নবাব গংরা। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। তিনি বলেন, তার চাচাতো ভাই নির্দোষ। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই তাকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করে তারা হত্যা করেছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় রুবেলের মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
সিলেট৭১নিউজ /আইআর/এসসি