ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি;: সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় হাকালুকি হাওরে ২৫ বিঘা জমিতে চার জাতের তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক আব্দুল মান্নান। হলদু রংয়ের তরমুজ চাষে চমক লাগিয়েছেন তিনি। কীটনাশক ব্যবহার না করায় এটি সম্পূর্ণ বিষমুক্ত তরমুজ। এ তরমুজ খেতে সুস্বাদু। বাইরে সবুজ ভেতরে হলুদ। আবার বাইরে হলুদ ভেতরে টকটকে লাল। নতুন জাতের এই তরমুজ খেতে উৎসুক জনতা মাঠে ভিড় করছেন। ফলে ক্ষেতে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।
জানা যায়, হাকালুকি হাওরে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল হোসাইনের কয়েক শত বিঘা জমি পতিত রয়েছে। সেই জমিতে চাষাবাদের জন্য হাকালুকি এগ্রো প্রজেক্ট গড়ে তুলেন সাইফুল্লাহ। গেলো বছর বরিশাল থেকে কৃষক আব্দুল মান্নানকে ফেঞ্চুগঞ্জ নিয়ে আসেন। মান্নানের পরামর্শে হাকালুকি হাওরে ফেঞ্চুগঞ্জ ওয়াচ টাওয়ারের পাশে ২৫ বিঘা পতিত জমিতে তরমুজ চাষাবাদ শুরু করেন।
কৃষক আব্দুল মান্নান জানান- ইয়েলো বেবি, কেনিয়া, ক্যামমেলিয়া ও কালো মানিক নামে চার জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। ইয়েলো জাতের তরমুজের বাহির ও ভেতর হলুদ। কেনিয়া জাতের তরমুজের বাহির সবুজ ও ভেতরে হলুদ। ক্যামমেলিয়া ও কালো মানিক জাতের তরমুজের বাহির ব্লাকিষ্ট সবুজ ও ভেতর লাল। ওই জমিতে প্রায় ১৬ হাজারের মতো গাছ রয়েছে। যার প্রতিটিতে ৩-৪টি করে তরমুজ এসেছে। অল্প সময়ে এ জাতের তরমুজ থেকে যে ফলন এসেছে তা থেকে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তিনি।
হাকালুকি এগ্রো প্রজেক্টের পরিচালক মো. রুকুনুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পরিপক্ক প্রতিটি তরমুজ ৩-৪ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে। এ উপজেলায় হলুদ রংয়ের তরমুজ চাষ এই প্রথম। তরমুজের স্বাদ অসাধারণ এবং মধুর মতো মিষ্টি। ক্ষেতে তরমুজ বিক্রি হয়ে যাওয়ায় বাজারজাত করতে হচ্ছে না।
হাকালুকি হাওরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জমির চারপাশে জাল দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। ক্ষেতে প্রতিটি গাছে ৩-৪টি তরমুজ রয়েছে। একেকটি তরমুজ ২-৩ কেজি ওজনের মতো হবে। ক্রেতারা মাঠ থেকে তরমুজ কিনে নিচ্ছেন।
কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা থেকে তরমুজ কিনতে আসা যুবক ফারদিন আহমদ বলেন, ‘আমার এক বন্ধু গত কয়েকদিন আগে হলুদ রংয়ের তরমুজ আমাকে খাইয়েছিল। তরমুজের বাহির সবুজ ও ভেতর হলুদ। খেতে খুব সুস্বাদু তরমুজটি। সেজন্য আমি আমার পরিবারের জন্য তরমুজ কিনে নিয়ে যেতে এসেছি।’
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা থেকে আসা যুবক সাদিক হোসেন বলেন, ‘ফেইসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জের এই হলুদ তরমুজ খুব ভাইরাল হয়েছে। দেখে ভাবলাম সরেজিমনে গিয়ে দেখে কিনে আনবো। সেজন্য হাকালুকি হাওরে এসেছি। এখানে উৎসুক জনতার খুব ভিড়। সকলেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত দেবনাথ বলেন, হলুদ রঙের তরমুজ চাষ এ অঞ্চলে প্রথম। সাধারণ তরমুজের চেয়ে এর স্বাদ অনেক ভালো, মিষ্টিও অনেক বেশি। সাধারণত ৬০ দিনেই এ ফসল বাজারজাত করা যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ ফসলের আবাদ হাকালুকি হাওরে ভালো হয়েছে।
সুত্র: সিলেট টুডে
সিলেট৭১নিউজ /আইআর