সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: অগ্রিম টাকা নিয়ে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি মাহফিলে না আসার অভিযোগ ওঠেছিলো সময়ের আলোচিত ইসলামি বক্তা গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরির বিরুদ্ধে। আয়োজক কমিটি এ বিষয়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাহেরির পক্ষ থেকে দাওয়াত রাখা এবং দুই ধাপে ৩৩ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেন।
তবে সেই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তাহেরি সিলেট আদালতে মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে তিনি সিলেটে আসেন এবং সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলার আবেদন করেন।
এসময় আদালত প্রাঙ্গণে গিয়াস উদ্দিন তাহেরি সাংবাদিকদের বলেন, আমি বালাগঞ্জের মাহফিলের কোনো দাওয়াত পাইনি। জানি-ই না কে বা কারা আমার নাম করে টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে তাই আমি আদালতে মামলা দায়ের করতে এসেছি। বিভিন্ন ফেসবুক লাইভে আমাকে গালিগালাজ করা হয়েছে এবং আমার নামে টাকা নেওয়ার অপবাদ দেওয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে মামলা দায়ের করছি। আদালত আমার আবেদনটি আমলে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরি অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে সিলেটের বালাগঞ্জে একটি ওয়াজ মাহফিলে আসেননি- এমন অভিযোগ ওঠে গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ)। এদিন বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠে এ মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন স্থানীয়রা।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়- ওয়াজ মাহফিলটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরিকে। বিকালের দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে তাঁর ওয়াজ করার কথা ছিলো। মাহফিলে আসা বাবদ তার পিএএস-এর কাছে দুই ধাপে অগ্রিম ৩৩ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকাল থেকেই তাহেরির পিএসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলে কেউ রিসিভ করেননি। ওয়াজের নির্ধারিত সময় পর্যন্তও কেউ কল রিসিভ করেননি, এমনকি কল ব্যাকও করেননি।
এক পর্যায়ে টাকা নিয়ে তাহেরির না আসার অভিযোগটি আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মাহফিলের মাইকে জানিয়ে ওয়াজ শুনতে আসা মুসল্লিদের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। এসময় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তাহেরির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং জুতা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এছাড়াও এসময় আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে তাহেরিকে পুরো সিলেটে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এমন কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
পরবর্তীতে বিষয়টি তাহেরির নজরে আসলে তিনি এ অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করেন। ওইদিনই তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আজকে দিনের বেলা একটি ফেসবুক লাইভ ও ইসলামী সুন্নী মহা সম্মেলনের একটি পোস্টার আমার নজরে এসেছে, উক্ত লাইভে আমাকে নানা ভাবে দোষারোপ করে কথা বার্তা বলা হয়েছে। পোস্টগুলোতে মানহানিকর কথা বলা হয়েছে। যা কখনও কাম্য নয়,আমি দৃঢ় চিত্তে বলতে চাই, আমাকে দাওয়াত না দিয়ে মাহফিল কমিটি প্রতারণামূলক ভাবে আমার নাম পোস্টারে ব্যবহার করেছে। প্রতারণামূলক ভাবে পোস্টারে আমার নাম ব্যবহার করে লক্ষ মানুষের কাছে আমাকে অপমান করেছে।
আবার ফেসবুক আইডিতে লাইভ করে মানহানিকর কথা বলছে। আমি কখনো দাওয়াত রাখলে মিস করি না, ঐ মাহফিলের কমিটির লোকজন কে চ্যালেঞ্জ করছি তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারবেনা আমি কখনও দাওয়াত নিয়েছি। যদি কোন প্রতারক আমার নাম ব্যবহার করে কোন প্রতারণা করে সেটার জন্য আমি দায়ী নয়, সংশ্লিষ্টরা দায়ী। আমার সাথে কখনও মাহফিল কমিটি যোগাযোগ করে নাই, আজকে বিকাল সাড়ে ৫ টায় সাংবাদিক আজাদ ভাই এর মাধ্যমে এ যোগাযোগ হলে এই প্রতারণা খবর জানতে পারি, কে বা কারা আমার নামে প্রোগ্রাম দিয়ে ৩৩ হাজার টাকা নিয়েছে। তাই উক্ত মাহফিল কমিটি প্রতারণা কারী ও ফেসবুক লাইভের বিরুদ্ধে আগামীকাল সাইবার আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সব মুনাফেক শয়তানের মুখোশ উন্মোচন হবে। ইনশাআল্লাহ
সিলেট৭১নিউজ /আইআর/বিডিপি