বাহরাইন প্রতিনিধি : দারিদ্রতা বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা, দুঃস্থ মানবতার সেবায় তালিমুল কুরআন বাহরাইনের উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত দেশটির মোহাররক এলাকায় আল ইসলাহ হল রুমে পবিত্র কোরআন তেলোওয়াতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সহ সভাপতি ফেয়ার আহমদের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সহ সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুর আহমেদ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইনের বোর্ড অব ডিরেক্টসরের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন,বিশেষ অতিথি ছিলেন বাহরাইন সরকার অনুমোদিত সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আসিফ আহমেদ,লিন্নাস গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন,বাংলাদেশ বিসনেস ফোরামের সহ সাধারণ সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন,বাংলাদেশ বিসনেস কমিটির সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদ, প্রধান আলোচক ছিলেন মো সালাউদ্দিন,বিশেষ আলোচক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার বদরুল আলম সহ রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বক্তারা বলেন- যাকাত আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত জীবন বিধানের অন্যতম বুনিয়াদ, আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমের অনেক জায়গায় যাকাত আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন, এক আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করো, যাকাত দাও, (সূরা নূর: ৫৬)।
অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে নবী! আমার যেসব বান্দা ঈমান এনেছে, আপনি তাদের বলে দিন, তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমার দেওয়া রিজিক থেকে আমারই পথে ব্যয় করে, গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে- সে দিনটি আসার আগে, যেদিন কোনো রকম বেচা-কেনা চলবে না, কোনো রকম বন্ধুত্ব কাজে আসবে না। (সূরা ইবরাহীম: ৩১)।
সম্পদ আল্লাহর দান, আল্লাহর দেওয়া সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে হবে, এজন্যই আল্লাহ তায়ালা সম্পদের মালিকের উপর অন্যান্য অভাবী মানুষের প্রয়োজন ও সামাজিক প্রয়োজন পূরণার্থে যাকাতের বিধান আরোপ করেছেন, দান-সাদাকাহ’র প্রতি অণুপ্রাণিত করেছেন,দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম, কতিপয় মানুষের হাতে সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়ে গেলে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়, জনসাধারণ দরিদ্রতায় নিমজ্জত হয়, অভাবের কারণে মানুষের নৈতিক চরিত্রের বিপর্যয় ঘটে, এর ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়, পদে পদে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার প্রভাবে এক শ্রেণির মানুষ রাতারাতি সম্পদের পাহাড়ের মালিক হয়, আরেক শ্রেণির মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়, ধনীরা অতি ধনী আর গরীবরা অতি গরীব হয়।যদি আমাদের সমাজ ইসলামী অর্থব্যবস্থার আলোকে পরিচালিত হতো তাহলে কেউ রাতারাতি অতি ধনী আর কেউ দৈন্য ও নিগ্রহের শিকার হয়ে অতি গরীব হতো না, অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দিতো না।প্রত্যেকের মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিরাজ করতো, ইসলামী অর্থব্যবস্থায় কেউ রাতারাতি অতি ধনী হওয়ার সুযোগ নেই, এ অর্থব্যবস্থায় উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারামের সীমা চিহ্নিত করে
বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে, লুটপাট, ধোঁকা, প্রতারণা ও জলুমের মাধ্যমে সম্পদ উপার্জনের সকল পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।ইসলামী অর্থব্যবস্থায় সম্পদ উপার্জিত হয় হালাল উপায়ে, অর্জিত সম্পদ থেকে বাধ্যতামূলকভাবে যাকাত, সদকাতুল ফিত্র ইত্যাদি আদায় করতে হয়, বিত্তবানদের মনে রাখতে হবে, সম্পদ এমনি এমনিতেই অর্জিত হয়নি, শ্রমিকের শ্রম, মেধা, ও মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় অর্জিত হয়েছে।অর্জিত সম্পদের মধ্যে সমাজের অন্যান্য অভাবী মানুষের অধিকার রয়েছে, এই অধিকার সঠিকভাবে গ্রহীতার হাতে পৌঁছে দেওয়া ইসলামের মৌলিক পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম, ধনীদের সম্পদ থেকে একটি নির্ধারিত অংশ আদায় করাকে ইসলামের পরিভাষায় ‘যাকাত’ বলা হয়। পরিশেষে দেশ জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সিলেট৭১নিউজ/আশফাক আহমদ/টিআর