কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজের ২ ঘন্টা পর নিজ ঘরের পাশে গর্ত থেকে ১ম শ্রেণির এক ছাত্রীর গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায় শমশেরনগরের কেছুলুটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত শিশু ছাত্রীর মা রুবিনা বেগম র্যালী বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে থানা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনাস্থলে সনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহীদুল হক মুন্সী, পুলিশ, র্যাব, পিবিআই,সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন কেছুলুটি গ্রামে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। বিপুল সংখ্যক লোকজন বাড়িতে ভিড় করছেন। নিহতের মা রবি আক্তার ওরপে রেলী বারবার বিলাপ করে কাঁদছেন। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ফাতেমা জান্নাত মৌ সবার ছোট। সে কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত কেছুলুটি বায়তুস সুন্নাহ জামে মসজিদ কেন্দ্রের কোরআন শিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, নিহত স্কুল ছাত্রী ফাতেমা জান্নাত মৌ এর লাশ ঘরের পিছনের গর্তে পা উপরে দিয়ে পুতা ছিল। অনেক খোঁজাখোজির পর নিতের মা রুবি আক্তার ওরপে রেলী মেয়েকে গর্তে পুতা পেয়ে চিৎকার দিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়ীর সামনের উঠানে নিয়ে আসেন। কি কারণে এ ঘটনা সংঘটিত হলো তা কেউই বলতে পারছেন না। তবে এ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা চলছে।
জানা যায়, কেছুলুটি গ্রামের ফরিদ মিয়ার মেয়ের ফাতেমা জান্নাত মৌ (৬) আছরের নামাজের পর থেকে শিশুটি পাওয়া যাচ্ছে না। তার মা অনেক খোঁজাখোঁজির পর সন্ধ্যায় তার বসত ঘরের পিছনের একটি ছোট মাটির গর্তে গলাকাটা, পেটের ভুড়ি বের হওয়া ও ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় দেখে শিশুটিকে কুলে নিয়ে আহাজারী করে ঘরের পিছন থেকে এনে বাড়ীর সামনের উঠানে রাখেন। পরে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করলে রাত সাড়ে ৮টায় পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের পিতা স’মিল কর্মী ফরিদ মিয়া বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়ীতে ছিলাম না। বাড়ীর পাশের একজনের মোবাইল ফোনে শুনে বাড়ীতে আসিয়া দেখি আমার মেয়ের গলা কাটা ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থা উঠানে। তাঁর অবুঝ শিশুকে কে বা কারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে দায়ীদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, এভাবে যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়।
কেছুলুটি গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী মো: দুরুদ আলী নৃশংস এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এ বর্বর ঘটনার পর থেকে পুরো গ্রামে আতংক বিরাজ করছে। এজন্য কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যায়নি। তিনি এ ঘটনার দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে দায়ীদের খোঁজে বের করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।
শিশু হত্যাকান্ডের কারণ জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক সোহেল রানা সুর্নির্দিষ্ট কারো সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি, খুব শিঘ্রই জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব। শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রীটির গলায় ও পেটে কাটার দাগ রয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলতেছে।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর