সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: ফরিদপুরের সদরপুরে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন ফাহিমা আক্তার (৩৬) নামে এক গৃহবধূ। মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানোর কথা বলে এবং অংশীদারি ব্যবসার লোভ দেখিয়ে প্রায় ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও ওই প্রতারক।
ফলে স্বামী-সন্তানের বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা খুঁইয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গৃহবধূ ফাহিমা। এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সদরপুর উপজেলায় জড়িপের ডাঙ্গী গ্রামের সৌদি প্রবাসী কাজেম খানের স্ত্রী মোসা. ফাহিমা আক্তার। তাকে স্থানীয় জাহিদ হোসেন বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইল টাওয়ার বসানোর কথা বলে তার কাছ থেকে গত বছরের জুন মাসে ১০ শতাংশ জমি ভাড়া চান। এতে তাকে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানান। প্রতারক জাহিদের কথায় প্রলুব্ধ হয়ে ফাহিমা আক্তার যৌথ ব্যবসার জন্য তার সাথে একটি চুক্তি করেন। পরে মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার বসানোর খরচ বাবদ কয়েক দফায় ফাহিমা আক্তারের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা নেয়।
কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও টাওয়ার না বসানোয় ফাহিমা আক্তার বিষয়টি নিয়ে জাহিদের কাছে গেলে তিনি বলেন, মাটি পরীক্ষার জন্য আরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে। নইলে কোম্পানি পুরো টাকাটাই মেরে দেবে। এসব কথা বলে আরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে প্রবাসী থাকা স্বামীর পাঠানো জমানো টাকাটার পুরোটাই তুলে দেওয়া হয় জাহিদের কাছে। এক সময় জাহিদ টাওয়ার না বসিয়ে গা ঢাকা দেন। বিষয়টি পরে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে জানান ফাহিমা আক্তার। সম্প্রতি জাহিদ হোসেন টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু টাকা না দিয়ে তিনি এখন টালবাহানা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফাহিমা আক্তার।
ফাহিমা আক্তার জানান, তিনি জাহিদের কথায় না বুঝে এবং স্বামী-সন্তানদের না জানিয়ে মারাত্মক ভুল করেছেন। স্বামীর পাঠানো পুরো টাকাটাই জাহিদ তার কাছ থেকে নানা প্রলোভন ও কৌশলে নিয়ে গেছে। এখন তিনি দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন। তার সংসার এখন নষ্ট হওয়ার পথে। জাহিদের কারণে তিনি সর্বশান্ত হয়ে গেছেন।
সর্বশান্ত ফাহিমা আক্তার এখন টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে জাহিদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া সদরপুর থানায়ও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাহিদ হোসেন এলাকায় না থাকায় এবং মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার। তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেট৭১নিউজ/টিআর