শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে সরকারি নির্দেশনা ও নিয়মনীতি অমান্য করে হাওরে শুরু হয়েছে জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য সম্পদ নিধন। এতে করে মা মাছসহ মাছের প্রজন্ম ধ্বংস যজ্ঞে প্রতিযোগিতায় নেমেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, উপজেলার ডেকার হাওরসহ বিলঝিল শুকিয়ে মৎস নিধনের ফলে একদিকে দেশীয় মাছের বংশ ধ্বংস হচ্ছে। অন্যদিকে জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য নিধন করায় হাওর রক্ষা বাঁধে ধস নেমে হুমকির মধ্যে রয়েছে ফসলি জমি। এতে ফসলহানির সংকটে আছেন কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দরগাপাশা ইউনিয়নের জামখলা হাওরের ৪ নম্বর পিআইসিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে এই বাঁধে ধস নামা শুরু হওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে হাওরের ফসলি জমি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান,সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে জামখলা জলমহালটি শুকিয়ে মৎস্য নিধন করেছেন ইজারাদার। এ যেন জলমহাল নয় বিরান ভূমি। জলমহালটি হাওর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি ধসে পড়েছে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন স্থানীয় কৃষকরা।
অভিযোগ রয়েছে, বাঁধ ধসে যাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পিআইসিরা। জলমহালের ইজারাদারদের বারবার নিষেধ করা হলেও সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করেছেন তারা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পিআইসিরা। শুধু এই জলমহালই নয়- প্রশাসন ও স্থানীয়দের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জলমহালের পার্শ্বের জামখলা বাঁধের উত্তর দিকের একটি খাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করেছেন পাইকাপন এলাকার মজ্জুল মিয়া। এতে ক্ষোব্ধ এলাকাবাসী।
একাধিক কৃষক বলেন, এই বাঁধটি আমাদের হাওরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় এই বাঁধটিতে ধস নেমেছে। তাই এখন আমরা ফসল হানির আশঙ্কায় আছি।
জামখলা হাওরের ৪ নং পিআইসির সাধারণ আফরুজ মিয়া বলেন, আমার বাঁধের কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু বাঁধের পার্শ্বের জলমহাল শুকিয়ে মাছ নিধন করায় আমাদের বাঁধটিতে ধ্বস নেমেছে। এতে বাঁধ নিয়ে হুমকির মধ্যে আছি আমরা। যারা আইন অমান্য করে ফিসিং করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
জামখলা জলমহাল ইজারাদার ফয়জুল হক বলেন, আমরা পুরো জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করিনি। তলায় পানি এখনো আছে। আপনারা এসে দেখতে পারেন।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য নিধন করার কোন নিয়ম নেই। যারা এ কাজ করেছেন তারা নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছেন।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বাঁধে যদি আরও ধস নামে তাহলে আমরা অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এবিএ/২৪ ফেব্রুয়ারী