শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি;: ছুটির দিনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মূখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন স্পটগুলো। প্রতিবছর শীত মৌসুমে হাজারো পর্যটক ভিড় করলেও করোনার কারণে গত দুইবছর ধরে তুলনামূলক তেমন পর্যটকের দেখা নেই।
মৌলভীবাজার জেলায় দুইটি ফাইভ স্টার হোটেল রয়েছে। তারমধ্যে একটি হলো দুসাই রিসোর্ট এন্ড স্পা আর আরেকটি হলো শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর এলাকায় অবস্থিত গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ। এছাড়াও জেলায় প্রায় দু-শতাধিক ছোট-বড় হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে।
পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হলো চা বাগান, বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, শ্রীমঙ্গল বধ্যভূমি একাত্তর, ফিনলে চা বাগানের ভেতরে ডিনেস্ট্রন সিমেট্রি, মাধবপুর লেক, বীর শ্রেষ্ট হামিদুর রহমানের স্মৃতি সৌধ, কলাবন, হামহাম জলপ্রপাত, বাইক্কাবিল হাইল হাওর, এবং লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
যার অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।
কিন্তু করোনার দাপটের পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও বর্তমানে দেশে করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকশূন্য হতে শুরু করে ছিলো। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওযায় আবারও দেশে পর্যটনখাতে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ফটকের সামনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দেলোয়ার মিয়া জানান, কিছুদিন আগে পর্যটক কম ছিল বিধায় আমার ব্যবসা তেমন ভাল ছিলো না। বর্তমানে পর্যটক আসায় ব্যবসাও ভাল হচ্ছে।
রাধানগর বালিশিরা রিসোর্টের চেয়ারম্যান শহিদুল হক বলেন,পর্যটক খুব বেশি আসছে। আশাকরি পর্যটনে আগের মতো প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে।
শ্রীমঙ্গল চা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণধীন টি রিসোর্টের ম্যানেজার শামসুদোহা বলেন, করোনার শেষদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে পর্যটক ভালো ছিলো। কিছু দিন আগে ওমিক্রনের কারণে প্রতিদিন ২-১টা রুম বুকিং হতো। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও পর্যটক আসতে শুরু করেছে।
জেলার সিনিয়র ট্যুর গাইড সৈয়দ রিজভী জানান, আমি বিদেশী পর্যটক গাইড করি তাই আমি আবার বেকার হয়ে পড়েছিলাম। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটক আসতে শুরু করেছে। এখন আশা করি ভাল হবে।
পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত মৌলভীবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ নোয়াব আলী বলেন, দিন দিন পর্যটকের উপস্থিতি বাড়ছে। পর্যটকরা যাতে সুন্দর নির্বিন্ঘে ভ্রমণ করতে পারেন, তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জেলায় পর্যটক কম। লাউয়াছড়ায় এবার রাজস্ব কম হয়েছে। কারণ সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মানার কারণে পর্যটক কম আসায় রাজস্বখাতে প্রভাব পড়েছে। আর এটা স্বাভাবিক। তবে পরিস্থিতি সম্পূর্নরুপে স্বাভাবিক হলেও আবারও বিদেশী পর্যটকের ভীড় বাড়বে।
উল্লেখ যে, দেশি-বিদেশী মিলে ১৬৬ টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে ৯৩টি চা-বাগান ও শতাধিক পর্যটন স্পট।
আইআর/১৯ ফেব্রুয়ারি