সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি;: পূর্বপরিচিত হওয়ায় শারীরিক সমস্যা নিয়ে শাহনাজ পারভীন জোৎস্না যান ফার্মেসিতে মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ কিনতে। সেখানে শাহনাজকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তিনজনে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের কথা পরিবারকে জানাতে চাইলে সেখানেই তাকে হত্যা করে লাশ করা হয় ছয় টুকরা।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে একটি ফার্মেসি থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহানা পারভিন জ্যোৎস্নার ৬ টুকরো খণ্ডিত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ঢাকা থেকে শুক্রবার ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপ অভিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি। তার আগে সুনামগঞ্জ থেকে অভির সহযোগী অনজিৎ চন্দ্ৰ গোপ ও অসীত গোপকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ব্রিফিংয়ে ফার্মেসি মালিক অভি জোৎস্নাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, শাহনাজ ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজ বাসায় দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন। তার স্বামী হরকু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সৌদি প্রবাসী। পরিবারের সদস্যদের ওষুধ জিতেশের ‘অভি মেডিক্যাল হল’ ফার্মেসি নিয়মিত কেনার ফলে জিতেশের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। শাহনাজ কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই পরামর্শ ও ওষুধ নিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে জিতেশের ফার্মেসিতে যান।
মুক্ত ধর আরও জানান, ফার্মেসির ভেতরে প্রাথমিক চিকিৎসা কক্ষে তাকে বসিয়ে রাখা হয় এবং কাস্টমারের ভিড় কমলে তার সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক ওষুধ তাকে দেয়া হবে জানানো হয়। রাত হয়ে যেতে থাকলে তিনি বাড়ি ফিরতে চান।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘এরইমধ্যে জিতেশ তার বন্ধু মুদি দোকানদার অনজিৎ গোপ ও পাশের অরূপ ফার্মেসির মালিক অসীত গোপকে সঙ্গে নিয়ে জোৎস্নাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। তাই তাকে চিকিৎসার কথা বলে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। জোৎস্না ঘুমিয়ে পড়লে তারা ফার্মেসি বন্ধ করে চলে যান। পরে রাত গভীর হলে তিনজনে গিয়ে ধর্শণ করেন।’
আসামির স্বীকারোক্তির বরাতে মুক্ত ধর জানান, জোৎস্নার জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি পরিবারকে জানাতে চাইলে ওই তিনজন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে তিনজন মিলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে লাশটি ধারালো ছুরি দিয়ে মাথা, দুই হাত, দুই পা এবং বুক, পেটসহ ৬টি অংশে ভাগ করে ফেলে। দোকানে থাকা ওষুধের কার্টুন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে ফার্মেসি তালা দিয়ে তারা চলে যান।
সিআইডি জানায়, তার লাশ সুবিধাজনক সময়ে মাছের খামারে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল আসামিরা। তবে তার আগেই নিহতের ভাই থানায় এসে মামলা করলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আইআর/১৯ ফেব্রুয়ারি