সিলেট৭১ ডেস্ক:; মধ্য আকাশে কোনো কারণ ছাড়াই বিমানের একটি ফ্লাইটের ইমার্জেন্সি পাওয়ার কার্যকর করেন পাইলট। ১৩ সেকেন্ড ধরে এই ইমার্জেন্সি পাওয়ার কার্যকর করা হয়। পাইলটের এমন কাণ্ডে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। শঙ্কা ছিল বিমানের ইঞ্জিন জ্বলে যাওয়ার। তবে নিরাপদেই অবতরণ করে ফ্লাইটটি।
মূলত বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে শেষ পন্থা হিসেবে ব্যবহার হয় ইমার্জেন্সি পাওয়ারের। এভিয়েশনের পরিভাষায় এটি মেটাল-টু-মেটাল থ্রাস্ট নামে পরিচিত।
ঘটনাটি গত ১ ফেব্রুয়ারির ঢাকা থেকে সিলেটগামী বিজি-৬০১ ফ্লাইটের। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নতুন কেনা ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ ধ্রুবতারার (রেজিস্ট্রেশন নম্বর: এস২-একেডি) ফ্লাইটটিতে ইমার্জেন্সি পাওয়ার কার্যকর করেছিলেন পাইলট ক্যাপ্টেন রুবাইয়াত।
বিমানের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইমার্জেন্সি পাওয়ার কার্যকরের পরেও বিমানটি নিরাপদে সিলেটে অবতরণ করে। ঝুঁকি নিয়েই ফিরতি ফ্লাইটে সিলেট থেকে ১ শিশুসহ ৪৯ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরে এয়ারক্রাফটি। আর অবতরণের ৮ দিন পরও বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি পাইলট রুবাইয়াত।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা জানান, যদি আকাশে কোনো ফ্লাইট জরুরি অবস্থায় পড়ে কিংবা একটি ইঞ্জিন ফেল করে কিংবা এয়ারক্রাফটের সামনে হঠাৎ পাহাড় চলে আসে, তখনই জরুরি ভিত্তিতে পাইলট ইমার্জেন্সি পাওয়ার কার্যকর করেন। বিমানের ধ্রুবতারায় ইমার্জেন্সি পাওয়ার যদি আরও বেশি সময় কার্যকর থাকত, তাহলে আকাশেই এয়ারক্রাফটির পুরো ইঞ্জিন জ্বলে যাওয়ার শঙ্কা ছিল।
ওই ঘটনার পর এয়ারক্রাফটি বর্তমানে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে। ইঞ্জিন মেরামত গ্রাউন্ডেড বিবেচনায় বিমানটির প্রায় ৬০ থেকে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিমান কর্তৃপক্ষকে জানানো তো দূরের কথা, এতো বড় ঘটনা নিজের রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে লগ বইয়েও লিপিবদ্ধ করেননি ক্যাপ্টেন রুবাইয়াত। আর এবিষয়ে পাইলট বা বিমানের দায়িত্বশীল কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিমান দুর্ঘটনা বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন (অব.) সালাহ উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ বলেন, অবতরণের পর নিয়ম অনুযায়ী বৈমানিককে অবশ্যই ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়াও এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা লগ বইতে লেখার কথা। অনেক পাইলটই তা করেন না। এটা দুঃখজনক। এটা একটা বদভ্যাস, ডিপার্টমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ফেইলিয়র।
ড্যাশ-৮কিউ ৪০০ মডেলের এ উড়োজাহাজটি সম্পূর্ণ নতুন। গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি এটি ঢাকায় আনা হয় কানাডার ডি হ্যাভিলেন্ড অ্যারোস্পেস থেকে। কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের জিটুজি চুক্তিতে উড়োজাহাজটি ক্রয় করা হয়। ৭৪ আসনের উড়োজাহাজটির নাম ধ্রুবতারা রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এবিএ/১০ ফেব্রুয়ারী-২১