বড়লেখা প্রতিনিধিঃঃ মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চাঞ্চল্যকর সাহিদা আক্তার সুলতানা (৩০) হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার চার্জশীটের বিরুদ্ধে বাদির দাখিলকৃত নারাজির শুনানি শেষে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক এই নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার (০৮ ফ্রেব্রুয়ারি) দুপুরে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি গোপাল দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদির নারাজি পিটিশনে সাহিদা হত্যা মামলার চার্জশীট গ্রহণ করেননি আদালত। পুনঃতদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার দাসেরবাজার ইউপির পানিশাইল গ্রামে লন্ডন প্রবাসী জয়নাল উদ্দিনের (৬০) দ্বিতলবিশিষ্ট বাংলো বাড়ির একটি কক্ষের ভেতরের মেঝে থেকে সাহিদা আক্তার সুলতানার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে পাঠায়। ঘটনার আগে প্রবাসী জয়নাল উদ্দিন ওই বাড়িতে থাকলেও ঘটনার পর তিনি গাঁ ঢাকা দেন। পরে জানা যায় জয়নাল উদ্দিন দেশ ছেড়ে লন্ডনে পালিয়েছেন। পুলিশ জানায়, নিহত সাহিদার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার রাইয়াপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের রব্বান মিয়ার মেয়ে। জয়নাল উদ্দিনের সঙ্গে সাহিদার মুঠোফোনে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর জয়নাল সাহিদাকে বিয়ে করেন। তবে জয়নাল উদ্দিন দাবি করেন, সাহিদার সঙ্গে তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। আর সাহিদা আত্মহত্যা করেছেন। তাকে হত্যা করা হয়নি।
এ ঘটনায় নিহত সাহিদার বাবা রব্বান মিয়া লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরী, ইকবাল হোসেন, ওয়াহিদুজ্জামান লিপু, সোয়া মিয়া ও রহমত আলীকে আসামী করে বড়লেখা থানায় হত্যা মামলা (জিআর-৩৯/২০) দায়ের করেন। গত বছরের ৯ মার্চ এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথ প্রধান আসামী লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচণায় অভিযুক্ত করে ও অন্যান্য আসামীদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলার ধার্য্য তারিখে গত ০৬ ফ্রেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে চার্জশীটের ওপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। বাদির নারাজি পিটিশনে আদালত তা গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডিতে স্থানান্তরের আদেশ দেন।
মামলার বাদি রব্বান মিয়া অভিযোগ করেন বলেন, লন্ডন প্রবাসী জয়নাল চৌধুরী পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়েছেন। আমার বড় মেয়ের ১৪ বছরের কিশোর ছেলে নয়ন আহমদকেও সে অপহরণ করেছিল। আমার মেয়েকে হত্যার পর ঘটনা গোপন রাখতে নাতিকে (নয়ন) জিম্মি করে বিমানে ঢাকায় নিয়ে যায়। তদন্ত কর্মকর্তা প্রধান আসামীকে বাঁচাতে হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বানিয়েছেন। এ চার্জশীটের ওপর আদালতে নারাজি পিটিশন দিলে বিজ্ঞ আদালত তা গ্রহণ না করে পুনঃতদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিএ/৯ ফেব্রুয়ারি