নিজস্ব প্রতিবেদক:: বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক, ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সিলেট সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমিন বিপ্লব আগামী ২৬ জানুয়ারি আসামি পরীক্ষার তারিখ ধার্য করেছেন। এই মামলায় এ পর্যন্ত ২৯ জনের মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। সিলেট সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক আরমান আলী, পরিদর্শক (আইটি ফরেনসিক) মাসুদ সিদ্দিকী ও উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানার সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে মাসুদ সিদ্দিকী ও সোহেল রানার সাক্ষ্যগ্রহণের পর জেরা সম্পন্ন হলেও আরমান আলীর জেরা অসম্পূর্ণ থাকায় সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তারিখ নির্ধারণ করে জেরা সম্পন্ন করেন। বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনায় আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ ও অ্যাডভোকেট ইমরান আহমদ। বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন জানান, মামলার আসামি ও সাক্ষীদের অনুপস্থিতিতে কয়েক দফা সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর ফলে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে। ইতিমধ্যে এই মামলায় ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। বাকি সাক্ষীদের মধ্যে দুজন দেশের বাইরে রয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এই মামলার সিআইডি’র পরিদর্শক তদন্তকারী কর্মকর্তা আরমান আলী সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অবশিষ্ট সাক্ষ্য উপস্থাপন করেছেন। আগামী ২৬ জানুয়ারি আসামি পরীক্ষার জন্য তারিখ ধার্য করেছেন। এর মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হলো।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ মে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারের নুরানি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে অনন্ত বিজয়কে কুপিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম। নিহতের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। ২০১৭ সালের ৯ মে সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী ৬ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক অভিযোগ দেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, শফিউর রহমান ফারাবী, মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন, হারুনুর রশীদ ও ফয়সল আহমদ। এই মামলার আসামিদের মধ্যে ফারাবী ও আবুল খায়ের বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। অপর আসামি মান্নান রাহী কারাবন্দী অবস্থায় মারা গেছেন। অপর তিন আসামি প্রথম থেকেই পলাতক। ২০১৭ সালের ২৩ মে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল। ২০২০ সালে মামলাটি বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়।
বিএ/২১ জানুয়ারি