হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:: টানা ৩৯ দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল সোমবার থেকে আবারও চালু হচ্ছে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান। বাগানের এক শ্রমিকের একটি ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এতে টানা ৩৯ দিন বন্ধ থাকে বাগানের উৎপাদন।
রোববার জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহানের কার্যালয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক সমঝোতার মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। শ্রমিকেরা জানান, দিলিপ কিউট নামে এক শ্রমিক তাঁর নামে বরাদ্দকৃত জায়গায় একটি পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করলে বাগানের ম্যানেজার তাতে বাধা দেন। এরপর তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর বাগানের পঞ্চায়েত নেতারা ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন শ্রমিক ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ডেপুটি ম্যানেজার মো. মহিউদ্দিনকে মারধর করেন। এ ছাড়া শ্রমিকেরা বাংলো ভাঙচুর করেন। পরবর্তীতে ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া বাগান মালিকের কাছে বিষয়টি জানালে গত ৯ ডিসেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য বাগান বন্ধ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে শ্রমিকদের কাজে না আসতে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাগানের প্রায় ৫ শতাধিক চা শ্রমিক পরিবার চরম খাদ্য সংকটে পড়ে।
তাঁরা জানান, একজন শ্রমিক এক সপ্তাহ কাজ করলে ৮শ ২৬ টাকা বেতন পায়। সপ্তাহে ৬ কেজি নিম্নমানের আটা রেশন হিসেবে দেওয়া হয়, যার জন্য বেতন থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। কোন শ্রমিক যদি সপ্তাহে দুই দিন কাজে অনুপস্থিত থাকে তাহলে রেশন দেওয়া হয় না। ফলে নিয়মিত কাজ করেও তাদের অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। ৩৯ দিন বাগান বন্ধ থাকায় বেতন বন্ধ। তাই ক্ষুধার্ত পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে চা পাতা সেদ্ধ করে খেতে বাধ্য হচ্ছে। বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ঘেনু কেউট বলেন, জেলা প্রশাসক, মাধবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) উপস্থিতিতে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও মালিকপক্ষের মধ্যে আলোচনা শেষে সোমবার থেকে বাগান চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
বিএ/১৭ জানুয়ারি