নিজস্ব প্রতিবেদক:: বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে গভীর রাতে আন্দোলনে নেমেছিলেন ছাত্রীরা। সেই আন্দোলন সংষর্ষ, ভিসি অবরুদ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে।
এদিকে, আন্দোলন সংগ্রামে শাবি উত্তাল হলে অবশেষে পদত্যাগ করলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজা। রোববার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। জানা যায়, জাফরিন আহমেদ অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন এবং হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।ছাত্রীরা ১৪ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনের নামার মূল কারণ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজা।১৪ জানুয়ারি রাত ৯টায় হলের আবাসিক ছাত্রীরা প্রভোস্ট লিজার সাথে শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলতে চাইলে- তিনি আসতে অসম্মতি জানিয়ে উল্টো ছাত্রীদের বলেছিলেন ‘বের হয়ে গেলে বের হয়ে যাও। আমি আসতে পারবো না।’ তিনি ছাত্রীদের প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন ‘কেউ কি মারা গেছে? মারা গেলে তখন দেখা যাবে। বলেন, ‘আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই। প্রভোস্ট না এলে হলের ছাত্রীরা ত্রিশ মিনিটের মধ্যে হল ছেড়ে বেরিয়ে যাবে এমনটি জানালে প্রভোস্ট বলেছিলেন, ‘বের হয়ে যাও। লজ্জা থাকলে রুমে ঢুকবা না।’প্রভোস্টের এমন বাক্য বিনিময়ে ফুঁসে ওঠেন ছাত্রীরা। টানা ২ ঘণ্টা আন্দোলন শেষে শাবি উপাচার্যের আশ্বাসে তারা রাত আড়াইটায় হলে ফিরেছিলেন। আন্দোলনে তিন দফা দাবি দেন ছাত্রীরা। পরবর্তীতে ভিসি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল কমিটির সদস্যরা সমস্যা সমাধানের জন্য ছাত্রীদের মধ্যে ৫ জন প্রতিনিধির সাথে ভিসির বাসভবনে বৈঠক করেন। আশ্বাস দেন তাদের তিন দফা দাবি পূরণের। এর মধ্যে অন্যতম দাবি ছিলো প্রভোস্টের পদত্যাগ।
এরই জের ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আজ সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।রোববার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে।এর আগে বিকেলে তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যকে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে আইআইসিটি ভবন থেকে উপাচার্যকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
বিএ/১৭ জানুয়ারি