সিলেট৭১নিউজ ডেস্কঃঃ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আশপাশে গড়ে উঠা ক্লিনিকের দালালরা। যেকোনোভাবে ভুল বুঝিয়ে অপারেশন, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসা করাতে ক্লিনিকে নিয়ে যেতে নানা কৌশলের আশ্রয় নেয় দালালরা। পরে ক্লিনিকে নেওয়ার পর ইচ্ছেমতো চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয়। এতে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয় প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরকারি চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা।
এমনকি হাসপাতালের ভেতরে প্রকাশ্যে তাদের এই কৌশলী প্রতারণার শিকার হতে হয় রোগীদের। আরও অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের সরকারি ওষুধ চুরিসহ একই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে বারবার ওষুধ নেওয়ার। তবে উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এখন থেকে হাসপাতালে অনিয়ম অনেকাংশেই কমবে বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে স্থাপন করা হয়েছে ৫৩টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। পুরো হাসপাতালের ভেতর ও বাইরের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা করতেই নেওয়া হয়েছে এমন উদ্যোগ। ৮ তলাবিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনে ৩১ ও পুরাতন ভবনে রয়েছে ২২টি সিসি ক্যামেরা। জানা যায়, আগে থেকেই পুরাতন ভবনে ২২টি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু কয়েক দিন আগে নতুন ভবনে আরও ৩১টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালের বাইরের চার দিক, জরুরি বিভাগ, বর্হিবিভাগ, ফার্মেসি, করিডোর, অপারেশন থিয়েটারসহ পুরো হাসপাতাল এখন ক্যামেরার আওতায়। হাসপাতালে বিভিন্ন অপরাধীদের শনাক্ত করাসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়বে সার্কিট ক্যামেরায়।
সদর উপজেলার হায়াতমোড় গ্রামের কলেজছাত্র নুরুল ইসলাম বলেন, কয়েকমাস আগে নানা অসুস্থ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাই। একপর্যায়ে এক দালাল নারীর নানারকম প্রচারণায় পড়ে পাশের ক্লিনিকে যাই। সেখানে গিয়ে নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়। এমনকি অনেক টাকা লাগে। অথচ সেই মহিলা যাওয়ার আগে বলেছিল অল্প খরচেই হয়ে যাবে। পরে জানলাম আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজিসহ যেসব পরীক্ষা করিয়েছিলাম, সেগুলো কম খরচে সরকারি হাসপাতালেই রয়েছে। তার দাবি, এভাবেই হয়রানির শিকার হয় চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। বহির্হিভাগের সামনে কয়েক দিক থেকে ক্যামেরা স্থাপনের ফলে এমন হয়রানি কমবে এবং অভিযোগ করলে তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক স্টাফ বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের। অবস্থা এমন যে, মাসের প্রথম ২০ দিনেই শেষ হয়ে যায় এই ওষুধ। এর অন্যতম প্রধান কারণ ওষুধ চুরি ও একই ব্যক্তির বারবার ওষুধ নিয়ে যাওয়া। তবে হাসপাতালের কে বা কারা ওষুধ চুরি করে সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। উল্লেখ্য, নতুন ভবনের ৩১টি ক্যামেরা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও পুরাতন ভবনের ২২টি ক্যামেরা আবাসিক মেডিকেল অফিসারের (আরএমও) কক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
বিএ/১৬ জানুয়ারি