নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ সিলেট বিভাগের মানুষের জন্য আকাশপথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ প্রতিদিন এই বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও সৌদিআরব থেকে এখানে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল করে। কিন্তু ওসমানীতে যাত্রীদের করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট’ চালু নেই। বিভিন্ন কারণে এই টেস্ট চালুর বিষয়টি আটকে আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই-তিনদিনের মধ্যে এই টেস্ট শুরু হয়ে যাবে।
এদিকে, ওসমানী বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু না থাকায় বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের মাধ্যমে সিলেটে করোনার ওমিক্রন ও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়ানোর শঙ্কায় আছেন সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, দ্রুত এই টেস্ট যাতে চালু করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটসহ সারাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি ওসমানী বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কেউ করোনাক্রান্ত কিনা, তা এই টেস্টের মাধ্যমে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে জানা যায়। ওসমানী বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে কেউ করোনাক্রান্ত তথা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়লে তাকে পাঠানো হবে খাদিমপাড়াস্থ ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে। সেখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে তাকে। শুধু তাই নয়, বিদেশ থেকে আসা কোনো যাত্রীর যদি টিকা না নেওয়া থাকে এবং তার মধ্যে যদি জ্বর, সর্দি তথা করোনার কোনো উপসর্গ থাকে, তবে তাকেও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। যাদের দুই ডোজ টিকা নেওয়া আছে, শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, তারা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওসমানী বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট পরিচালনার জন্য সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমদ সিরাজুম মুনীরের নেতৃত্বে টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। মুনীর ওসমানী বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য টিমের প্রধান। টেস্টের জন্য জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় কিটও বিমানবন্দরে পাঠানো হয়েছে। এসবের পরও কেন র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দরে? জানতে চাইলে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং ওসমানী বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য টিমের প্রধান ডা. আহমদ সিরাজুম মুনীর গনমাধ্যমকে বলেন, ‘র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরুর সকল প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে মাল্টিসেক্টরাল কোঅর্ডিনেশন প্রয়োজন। কারণ, কেউ টেস্টে পজিটিভ হলে তার ব্যবস্থাপনা কিভাবে হবে, ট্রান্সপোর্টেশন কিভাবে করা হবে প্রভৃতি কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া বাকি। এ বিষয়ে জেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল টিম কাজ করছে।’ সিলেটের সিভিল ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি আছে টেস্ট শুরু করার। তবে এখানে স্বাস্থ্য বিভাগ, সিভিল এভিয়েশন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন সবার সমন্বয় প্রয়োজন। কারণ, টেস্টে করোনাক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের ব্যবস্থাপনার বিষয় আছে। যারা দেশে আসছেন, তাদেরকে যে বিমানবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মুখোমুখি হতে হবে, সেটাও আগেভাগে প্রতিটি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে জানাতে হবে।চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আগামীকাল রোববার বিকাল ৩টায় করোনা বিষয়ক জেলা সমন্বয় কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কমিটির সভাপতি। সেখানে সব বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এদিকে, এখন যেসব যাত্রী আসছেন, তাদের আরটিপিসিআর পরীক্ষার সনদ এবং করোনার টিকার সনদ যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান ডা. জন্মেজয়।
বিএ/১৫ জানুয়ারি