শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:: চায়ের ‘রাজধানী’ শ্রীমঙ্গল ঘিরে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষ্যে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে এ মেলা। চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে শ্রীমঙ্গলে এসেছে দেশি প্রজাতির মাছ। মাছপ্রেমীদের রসনার বিলাস ঘটাতে বাজার ভরা এখন দেশি মাছে। দরদাম হাঁকিয়ে শুধু কেনার হিড়িক পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীমঙ্গল শহরের মাছ বাজারে নানা জাতের মাছ দেখা গেছে। সবচেয়ে বড় দুটি মাছ উঠেছে বাঘাড়। যার বড়টির ওজন ৭২ কেজি এবং ছোটটির ৪৫ কেজি। উপজেলার লালবাগ এলাকার সম্পর্কে দুই খালাতো ভাই মাছ বিক্রেতা হাফিজ আহমেদ ও মনসুর আলী বিশালাকৃতির বড় ও ছোট বাঘাড় মাছ দুটি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদী থেকে এনেছেন বলে জানান।
তারা বড় বাঘাড় মাছের দাম হেঁকেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ছোটটির দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মনসুর আলী জানান, বড় মাছটি ১ লাখ ২০ হাজার ও ছোট মাছটি এক লাখ টাকা পেলে বিক্রি করে দেবেন।
তিনি আরও জানান, বড় মাছটির দাম উঠেছে ৭৫ হাজার টাকা এবং ছোটটির ৪৫ হাজার টাকা। আরেক মাছ ব্যবসায়ী মফিজ মিয়া ২৫ কেজি ওজনের কাতল মাছ ভৈরব থেকে এনেছেন।
তিনি কাতল মাছটির দাম চাচ্ছেন ৩৫ হাজার টাকা। মাছের মেলায় মাছ ব্যবসায়ী গণি মিয়া বলেন— রুই, কাতল, আইড়, মৃগেল, বোয়াল, চিতল ইত্যাদি বহু টাকার মাছ শ্রীমঙ্গলের এ উৎসব উপলক্ষ্যে কিনেছি। এখন কিছুটা টেনশনে আছি যে ভালো দাম পাব কিনা? ভালো দামে বিক্রি না করতে পারলে লাভের মুখ দেখব না।
শহরের শ্যামা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফণীভূষণ চক্রবর্তী জানান, শ্রীমঙ্গলের এই মাছের মেলা প্রায় ৮০ বছরের পুরনো। আগে শহরের গদার বাজারে এ রকম মাছের মেলা বসত। মাছের সঙ্গে বাঙালির সখ্যতা আদিকাল থেকে।
সেই ধারাবাহিকায় পৌষসংক্রান্তির উৎসব ঘিরে এ বিশেষ দিনে বসে মাছের মেলা। আরও উল্লেযোগ্য ব্যাপার হলো— শ্রীমঙ্গলে এ উৎসব ঘিরে মাছ কেনা এখন একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। অনেক পরিবার রয়েছে যারা সপরিবারে পুরুষ সদস্যরা একত্রিত হয়ে আনন্দের সঙ্গে মেলায় মাছ কিনতে আসেন বলে তিনি জানান।
এবিএ/১৩ জানুয়ারি