নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পলাতক থাকা আলোচিত বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। সাড়ে তিন মাস আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকালে গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার চাচাতো ভাই সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশিক চৌধুরী।
তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। আগস্ট মাসে হারিছ চৌধুরী লন্ডনে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন। এর কয়েকদিন পর তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভও আসে। করোনার ধকল সাময়িক কাটিয়ে উঠলেও তার ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যায়। পরবর্তীতে আবারও তার পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সে সময় হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর সংবাদটি তার মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ফোনে দেশে জানিয়েছিলেন বলে জানান আশিক চৌধুরী।তিনি জানান, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। আর মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার।
আশিক চৌধুরী জানান, করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। এরপরও তিনি আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভুগছিলেন। প্রসঙ্গত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছর ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। বর্তমানে সেই মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে আসেন। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সটকে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন।হারিছ চৌধুরী ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিএ/১২ জানুয়ারী