সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান নদীতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলনকারীদের বোমামেশিনের তাণ্ডবে বিলীন হতে চলেছে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি। এই নদীতে সারা বছর কয়েক হাজার মানুষ বালু-পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ড্রেজার ও বোমামেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলনের কারণে কৃষকেরা প্রায় বেকার হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে চলছে অবৈধ ড্রেজার-বোমা।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান নদীতে বালু-পাথরমহালে প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। গত রোববার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালু-পাথর উত্তোলনকারী একাধিক শ্রমিক জানান, রাতের বেলায় শতাধিক অবৈধ ড্রেজার ও বোমামেশিন দিয়ে নদীতে পাথর উত্তোলন করে আসছে একটি ব্যবসায়ী চক্র। এই পাথর স্টিল বডি নৌকা করে রাতের বেলায় এ নদী দিয়েই সুরমায় নামছে। এসব অবৈধ মেশিন ব্যবহার ও স্টিল বডি দিয়ে পাথর নামানো নিয়ন্ত্রণ করছে একটি শক্তিশালী সংঘবদ্ধ চক্র। এ নদী থেকে হাতে পাথর উত্তোলন করে হাজারো শ্রমিকের জীবন-জীবিকা চলছে। আতর আলী নামে এক শ্রমিক বলেন, অবৈধ ড্রেজার-বোমামেশিন বন্ধে প্রশাসনকে গুরুত্ব দিতে হবে। এরই মধ্যে নদীর বিভিন্ন অংশে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই গর্তে পড়ে শ্রমিকদের মৃত্যুও হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, জমিজমা-বসতভিটা সবই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শত শত বোমামেশিন চলে রাতের বেলায়।
আব্দুল মনাফ নামে আরেকজন বলেন, ‘আমরা ঘরবাড়ি হারিয়েছি নদীতে। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। হাতে পাথর তোলে জীবিকা নির্বাহ করছি।’ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে রাতের বেলা যৌথ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তা বন্ধ করব।’
বিএ/১১ জানুয়ারী