সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: সমাজের কিছু অসচেতন মানুষের তীর্যক কথা-বার্তা বাঁচতে দিলো না জোনাকিকে। নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ূয়া জোনাকি (১৫) অপমান সইতে না পেরে অবশেষে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ১৮ দিন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে জোনাকি শুক্রবার মারা যায়।
পুলিশ-মামলার আইও এবং জোনাকির পিতা আব্দুল জব্বার জানায়, শেরপুর জেলা সদরের চান্দের নগর গ্রামের জনৈক চাঁন মিয়ার পুত্র নাজমূল (২৮) জোনাকিদের বাড়ী যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ করতো। গত ১৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল জব্বার তার কন্যা জোনাকিকে ঘরে একা রেখে পাশের বাজারে চা পান করতে যায়। জোনাকির মা ঢাকার একটি পোষাক কারখানায় কাজ করে। বখাটে নাজমূল সুযোগ বুঝে ঘরে ঢুকে জোঁনাকিকে ধর্ষণ করে। এসময় জোনাকি চিৎকারে নাজমূল পালিয়ে যায়। নাজমূল পালিয়ে যাবার সময় কেউ কেউ দেখে ফেলে।
পরের দিন ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার লোকজন জোনাকির পিতা জব্বারকে পুলিশের আশ্রয় নিতে বাধা দিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংশার উদ্যোগ গ্রহন করে। মেয়ের কলংক হবে, ভবিষ্যতে বিয়ে দিতে পারবে না, এমন সব কথা বলে জোনাকির পিতাকে এলাকার মাতাব্বররা থানায় আসতে দেয়নি বলে জোনাকির পিতা জানায়। কয়েকদিন যেতেই এলাকার কিছু অসচেতন মানুষ জোনাকিকে ঘটনার জন্য ভৎর্সনা করে তীর্যক কথাবার্তা বলতে থাকে। এই অপমান সইতে না পেরে ধর্ষণের প্রায় ২৫/২৬ দিনপর ২১ ডিসেম্বর জোনাকি বিষপান করে। গত ২ জানুয়ারি জোনাকির পিতা আব্দুল জব্বার নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাজমূলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
নালিতাবাড়ী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, ঘটনার বিষয়ে মেয়ের পিতা একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে। সহযোগি দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করেছি। প্রধান আসামিকে ধরার ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে।
নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, ঘটনার সম্পর্কে ওরা আমাকে কিছু বলেনি। ময়মনসিংহে ভর্তির ব্যাপারে আমাকে বললে তখন সহযোগিতা করি। মেয়েটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
আইআর/০৯ জানুয়ারি