চুনারুঘাট প্রতিনিধি:: বাঘ আতঙ্কে ঘর থেকে বেরোচ্ছে না চুনারুঘাটের মানুষ। দুই দিন আগে থেকে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করলেও শুক্রবার সন্ধ্যার পর সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শহরেও। নিজ নিজ ঘরে অবস্থানের জন্য মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার চুনারুঘাট উপজেলার তিন গ্রামে হঠাৎ আক্রমণ করে সাত ব্যক্তিকে আহত করে একটি প্রাণী। এরপর উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার দুপুর ১২টায় আহত ব্যক্তিদের বাড়ি গিয়ে দেখা করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি আহত ব্যক্তিদের দেওয়া বর্ণনা ও পায়ের ছাপ দেখে ওই প্রাণীটিকে প্রাথমিকভাবে শিয়াল বলে ধারণা করেন। তবে, নিশ্চয়তার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। বন কর্মকর্তা বলেন, বাঘ আক্রমণ করলে পেছন থেকে করত, গায়ে থাবার দাগ বসাত এবং মেরে ফেলার চেষ্টা করত। কুকুর মানুষের অতিপরিচিত প্রাণী। তাই কুকুর হলে আহত ব্যক্তিরা সহজেই চিনতে পারতেন। মেছোবিড়াল এত ওপরে (শুধু মুখে) কামড়াত না। মেছোবিড়াল আক্রমণ করলেও গায়ে নখের দাগ বসাত। সব আলামত ও আহত ব্যক্তিদের বর্ণনামতে প্রাণীটি শিয়াল বলে ধরে নেওয়া যায়। কোনো কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে শিয়াল এমন আচরণ করতে পারে। তবে, এটা বেশি দিন করবে না। প্রাণীটির সন্ধান পাওয়া গেলে না মেরে আটকে রেখে বন বিভাগকে খবর দেওয়ার অনুরোধ করেছেন ওই কর্মকর্তা। বিশেষ করে রাতের বেলা সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধান্ত ভৌমিক জানান, বিষয়টি তিনি জানতে পেরে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বন বিভাগের লোকজন ঘটনার স্থানে রয়েছে। আহত ব্যক্তিদের বন বিভাগ চিকিৎসা বাবদ কিছু নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল ও রাতে হামলা করে উপজেলার আলীরাজাপুর গ্রামের ওয়াজেদ উল্লাহর ছেলে আব্দুল খালেক (৭০), কবির মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (২২), রাণীরকোট গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে মানিক মিয়া (৪৫), ছৈয়দ উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৪), অজ্ঞাতনামা এক নারী ভিক্ষুক, কালিশিড়ী গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুস সহিদ (৬৭) ও মাহফুজ মিয়ার মেয়ে শিল্পী আক্তার (২২) অজানা এক প্রাণীর আক্রমণে আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আব্দুল খালেকের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিরা চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিএ/৯ জানুয়ারী