শাল্লা প্রতিনিধি::হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে গত বছর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জেল খাটা ঝুমন দাস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জামানত খুইয়েছেন। গত বুধবার পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। এমনকি নিজের কেন্দ্রেও হেরেছেন ঝুমন।
ভোটের লড়াইয়ে ঝুমন হেরেছেন বড় ব্যবধানে। বিজয়ী প্রার্থী থেকে ৬ হাজার ৫৯০ ভোট কম পেয়েছেন তিনি। সেখানে জিতেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সুবল চন্দ্র দাস। আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৫৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত রঞ্জিত দাস পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪৩ ভোট। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, বিধি অনুযায়ী মোট কাস্টিং ভোটের আট ভাগের একভাগ কোনো প্রার্থী না পেলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। শাল্লা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, হবিবপুর ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোট ১৬ হাজার ৪২৬। এর মধ্যে ঝুমন পেয়েছেন ৯৬৮ ভোট। নিজের কেন্দ্রেও নৌকার কাছে হেরেছেন ঝুমন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়েন মোট চারজন। অপর প্রার্থী রাজিব কান্তি দাস ঢোল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮৩ ভোট।
গত বছরের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতের ‘শানে রিসালাত’ সমাবেশে তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। পরদিন মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস। এ ঘটনায় উত্তেজিত স্থানীয় মুসলিমরা নোয়াগাঁওয়ে শতাধিক হিন্দু বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পাশাপাশি নোয়াগাঁওয়ে হামলার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়। প্রায় ছয় মাস পর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ঝুমন দাস।
তাঁর ভোটে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করার পর থেকেই গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। যে কারণে তিনি ভোটে কেমন করেন, এ নিয়ে দৃষ্টি ছিল অনেকের।
বিএ/৭ জানুয়ারি