সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: প্রচণ্ড শীত থেকে বাঁচতে আগুন পোহাতে গিয়ে গত ১৫ দিনে ২২ জন শিশু ও বয়স্ক নারী অগ্নিদগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামছুন্নাহার (৫০) নামের অগ্নিদগ্ধ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শামছুন্নাহারের বাড়ী মিঠাপুকুর উপজেলার সন্তোসপুর এলাকায়।
মেডিক্যালের বার্ণ ইউনিট ও নিহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে বাড়িতে চুলায় আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত দগ্ধ হন শামছুন্নাহার। দীর্ঘ ৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শরীরে ৬০ শতাংশ দগ্ধতা নিয়ে মারা যান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে মেডিকেলের বার্ণ বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, রংপুরসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে আসা অগ্নিদগ্ধ বিভিন্ন বয়সী শিশু ও নারীদের হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসাধীন ২২ জনের মধ্যে সবশেষ গত পাঁচ দিনে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন দগ্ধ রোগী। এর মধ্যে এক বৃদ্ধাসহ আরো তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দগ্ধ রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, রংপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে এক সপ্তাহ ধরে শীতের তীব্রতা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। শীত নিবারণে গ্রামাঞ্চলে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর প্রবণতা বেড়েছে। আগুন পোহাতে গিয়েই সতর্কতার অভাবে অনেকে দগ্ধ হয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশির ভাগ দগ্ধ রোগী নারী ও শিশু। বার্ন ইউনিটে এসব রোগী এখন পোড়া ক্ষতের যন্ত্রণায় ছটফট করছেন।
বার্ন ইউনিটে কথা হয় সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। নীলফামারীর ডোমার উপজেলা থেকে তার চাচিকে নিয়ে এসেছেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ চাচির উন্নত চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত সাইফুল বলেন, বাড়িতে আগুন পোহানোর সময় আমার চাচির পরনের কাপড়ে আগুন ধরে যায়। এতে তার শরীরের ৬০ ভাগেরও বেশি দগ্ধ হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে এখনো ঢাকায় নিতে পারছিনা।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ জানান, জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার সন্তোষ পুর গ্রামের শামসুন্নাহার হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শীত নিবারণ করতে গিয়ে খড়কুটোর আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন। তার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায় এতে শ্বাসনালী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাকে আর বাঁচানো যায়নি।
আইআর/০৬ জানুয়ারি