সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক:: পেশায় দু’জনই ফুটবলার। খেলার মাধ্যমে পরিচয় একে অপরের সাথে। তারপর থেকেই প্রেম চলছিল দুই তরুণীর মধ্যে। এদের একজনের বাড়ি সিলেট এবং অপরজনের বাড়ি গাইবান্ধায়। প্রেম থেকে দু’জনই পরস্পরকে বিয়ে করতে সম্মত হন। কিন্তু সমকামী এই বিয়েতে দু’জনের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় পরিবার। সমকামি প্রেমের এই জুটির একজনের নাম আয়েশা। তিনি সিলেট জেলা নারী ফুটবল দলের সদস্য এবং অপরজনের নাম কবিতা। তিনি গাইবান্ধা নারী ফুটবল ঠিমের সদস্য। বিয়ের দাবিতে সিলেটের আয়েশা এখন গাইবান্ধার কবিতাদের বাড়িতে।
সমকামী এই দু’জনের বিয়েতে পরিবারের অসম্মতি পেয়ে দুজনই আত্মহননের চেষ্টা চালান। এই খবর পেয়ে সিলেট থেকে গাইবান্ধায় চলে যান আয়েশার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু নাছোড়বান্ধা আয়েশা। কোনভাবেই কবিতার বাড়ি ছাড়তে রাজি নন তিনি। আয়েশাকে জোর করে গাড়িতে তুলতে ব্যর্থ হন তার পরিবারের সদস্যরা। পরে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে আয়েশাকে বাসে তুলতে সক্ষম হন তারা।
জানা গেছে, মাস দুয়েক আগের ঘটনা। খেলার সুবাদে ঢাকায় আয়েশার সঙ্গে পরিচয় হয় কবিতার। পরিচয় থেকেই দুজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়। এরপর আয়েশা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে খেলতে যান। ওঠেন কবিতার বাড়িতে। কবিতার সঙ্গে একই রুমে রাত্রি যাপন করেন। এরপর একে অপরের প্রতি ভালো লাগা বেড়ে যায়। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন। একজন না খেয়ে থাকলে আরেকজন না খেয়ে থাকেন। হররোজই চলে তাদের ভাবের আদান-প্রদান। কয়েকদিন আগে কবিতা আয়েশার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করে দেন। এতে অস্থির হয়ে উঠেন আয়েশা।
বিষয়টি স্থানীয় কোচ, জনপ্রতনিধি ও পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। তারাও দুই তরুণীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে আত্মহননের চেষ্টা চালান দুই তরুণী। আয়েশা ধারালো ছুরি দিয়ে দুই হাত কেটে ফেলেন। কবিতাও গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
পরিবারের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে সিলেট থেকে আয়েশার মাসহ পরিবারের সদস্যরা গাইবান্ধায় চলে যান। তাকে বুঝিয়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তাকে ঘুমের ইনজেকশন পুশ করা হয়। তাতে কাজ হয়নি। একপর্যায়ের জোর করে আয়েশাকে বাসে উঠান পরিবারের সদস্যরা। এসময় আয়েশা চিৎকার বলেন, আমি কবিতার কাছে যাবো। আমি কবিতাকে ছাড়া বাঁচবো না। এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এবিএ/২৮ ডিসেম্বর