বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি;; গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৬ আসন। এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে সাংসদ ও একটানা দুই মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এছাড়াও তিনি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম পদে আসিন রয়েছেন।
গেল রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে তার নির্বাচনী এলাকায় ভরাডুবি হয়েছে নৌকা প্রতীকের। দুই উপজেলায় ২০টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ৭টি’তে জয়ী হয়েছেন। অন্য ইউনিয়নগুলোতে স্বতন্ত্র ও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এই ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন নৌকার ৪ প্রার্থী। এছাড়াও অধিকাংশ ইউনিয়নগুলোতে নৌকার প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেননি।
জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন- গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম, লক্ষীপাশা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ আহমদ চৌধুরী, লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মো. আব্দুল করিম খান ও বিয়ানীবাজার তিলপাড়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী এমাদ উদ্দিন।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মো. আব্দুল করিম খান মোট ১১টি কেন্দ্রে তিনি সর্বমোট ভোট পেয়েছেন মাত্র ১৩৯টি। এতে জামানত হারান তিনি। লক্ষীপাশা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মাহমুদ আহমদ চৌধুরী মাত্র ৩৪৬টি ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। অন্যদিকে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম ৪৭৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এছাড়া বিয়ানীবাজার উপজেলার ৮নং তিলপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমাদ উদ্দিন জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী না পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গ্রুপিংয়ের কারনে বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগ অনেক আগ থেকেই বিভক্ত। নির্বাচনেও নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেননি। এছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল সিদ্ধান্ত ও কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী পরিবর্তনের কারণে নৌকার ভরাডুবি ঘটেছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান খান ও দেওয়ান মকসুদুল ইসলাম আউয়ালের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কেউই ফোন ধরেননি।
কাঙ্কিত ফলাফল না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আরো দু’একটা ইউনিয়নে আমরা নৌকার বিজয় আশা করেছিলাম। বিশেষ করে বাদেপাশা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচনে নানা হিসেব-নিকেশের কারণে দলীয় প্রার্থীরা কাঙ্কিত ফল করতে পারেননি। এছাড়া দলীয় প্রতীকে না হলেও উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে খুবই সক্রিয় ছিল। তারা তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও দলীয় প্রার্থীর ক্ষতি করেছেন। লক্ষ্মনাবন্দ ও ঢাকাদক্ষিণে ভাল প্রার্থী দেয়া সম্ভব হয়নি। যে কারণে ওই দুই ইউনিয়নেও দলীয় প্রতীকে ভাল করতে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।’
আইআর/২৮ ডিসেম্বর