সিলেট৭১নিউজ ডেস্ক;: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পাঁচ দিনের মধ্যে চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পিবিআই এর পুলিশ সুপার সিরাজ আল মাসুদ প্রেস বিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মির্জাপুরের আজগনা ইউনিয়নের ঘাগড়া এলাকার একটি কলাবাগানে গত ১৭ ডিসেম্বর অজ্ঞাত এক মহিলার অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে পিবিআই টাঙ্গাইল জেলা এই হত্যা মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারী নিহতের স্বামী ওয়াসীমকে সনাক্ত করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। ওয়াসিম দিনাজপুর জেলার খানসামা থানার ডাঙ্গারপাড়া এলাকার ইছাহকের ছেলে।
পুলিশকে ওয়াসিম জানায়, ২০১৯ সালে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানের পাশে একটি ইট ভাটায় কাজ করার সময় নাজমা বেগমের সাথে পরিচয় হয়। সে ভোলার লালমহন থানার দেবীর চর বেরীবাঁধ হাওলাদার বাড়ি এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে। নাজমা ওই ইট ভাটায় বাবুর্চির কাজ করতেন। ইট ভাটায় কাজ করার সময় নাজমার সঙ্গে ওয়াসিমের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে ২০২০ সালে করোনা মহামারীর কারণে ইট ভাটার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ওয়াসিম নিজ এলাকা দিনাজপুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একথা শুনে নাজমা ওয়াসিমকে ঢাকা উদ্যানে দেখা করার কথা বলে। পরে নাজমার ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নাজমা ও তার লোকজন জোরপূর্বক ওয়াসিমের সঙ্গে নাজমার বিয়ে দেয় এবং তিন লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে। চলতি বছর ১১ ডিসেম্বর মির্জাপুর ইট ভাটায় নাজমা বেগম ওয়াসিমের সঙ্গে দেখা করতে আসে। পরে সেখানে দুই জনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নাজমা ডিভোর্স চায় ও দেনমোহরের তিন লাখ টাকা দিতে বলে। তা না করলে মামলা করার হুমকি দেয়। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে আরও ঝগড়া হয়। পরে ইট ভাটার পাশে কলাবাগানে ওয়াসিম নাজমার গলায় থাকা উড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মরদেহ গুম করার জন্য কলাবাগানের ভেতর মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
১৭ ডিসেম্বর নাজমা বেগমের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই নাজমা বেগমের বড় ভাই হোসেন ওরফে জুয়েল বাদি হয়ে ওয়াসিমকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের খানসামা মুন্সিপাড়া থেকে ওয়াসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইআর/২২ ডিসেম্বর