সিলেট ৭১ নিউজ ডেস্ক::সিসিক এর নির্বাচন হতে এখনও বছর দেড়েক বাকি। এখন থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপুলু। এবার কামরান নেই। ফলে আওয়ামী লীগকে খুঁজতে হচ্ছে নতুন প্রার্থী। তুমুল জনপ্রিয় কামরানের উৎকৃষ্ঠ বিকল্প কে হতে পারেন তা নিয়ে দলীয় ফোরামেও চলছে আলোচনা।
২০০৮ সালে বদরউদ্দিন আহমদ কামরান তখন কারাবন্দি। দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তবু তখন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন এই সভাপতি। টানা প্রায় ১৭ বছর সিলেট সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মেয়র ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন কামরান। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সর্বশেষ দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরফিুল হক চৌধুরীর কাছে হারতে হয় কামরানকে। গত বছরের ১৫ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কামরান। কামরানের মৃত্যুর দেড় বছর পেরিয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেরও বাকি বছর দেড়েক। তবে এরই মধ্যে সিলেটে শুরু হয়েছে নির্বাচনি আলোচনা। বিশেষত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগে কামরানের বিকল্প কে হতে পারেন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। দলটির একাধিক নেতাই সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে আগ্রহী। দলীয় কোন্দল থাকলেও এবারও বিএনপি থেকে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন পাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলে ধরা হচ্ছে। নগরে তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে। ফলে আরিফের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজতে হচ্ছে আওয়ামী লীগকে।
নির্বাচনের এখনও বছর দেড়েক বাকি থাকলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে এখনই মাঠে নেমে পড়েছেন দলটির অনেক নেতা। এদের মধ্যে শিপলু ছাড়া বাকি তিদনজনই গত সিটি নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
মেয়র পদে প্রার্থী হতে আগ্রহের কথা জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘গত নির্বাচনের সময় আমি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলাম। তখনও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বৃহত্তর পরিসরে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমি জনগণের সেবা করতে চাই। সংগঠন নেতা বানায়। কামরান ভাইকে সংগঠনই তৈরি করেছিল। দায়িত্ব পেলে আমিও এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাই।’ গত নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ। আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘এবারও দলের মনোনয়ন চাইব। আমি সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত আছি। দলের মূল্যায়ন করলে আমি সফল হতে পারব।’ আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কামরান পুত্র আরমান আহমদ শিপুলুর নামও আলোচিত হচ্ছে। কামরান বেঁচে থাকতেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন শিপলু। এখন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
শিপলু বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সিলেটের মানুষের সঙ্গে আমার পরিবারের আত্মার সম্পর্ক। আমার বাবা সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। আজীবন বঙ্গবন্ধুর আর্দশের কর্মী ছিলেন। আমিও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার বাবার মতো সিলেটের মানুষের সুখে দুখে কাছে থাকার চেষ্টা করছি। সুযোগ পেলে আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’ গত নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। নগরের ২০ নং ওয়ার্ডের টানা চার বারের কাউন্সিলর। এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তার নাম আলোচিত হচ্ছে।আজাদ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগে তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে নগরবাসীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছি। আশা করছি সবকিছু বিবেচনা করে দল এবার আমাকে মূল্যায়ন করবে।’
বিএ/২২ডিসেম্বর/