সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে চলছে ২৩৮টি স্টোন ক্রাশার। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে। সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বেলা’র সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আখতার এই তথ্য তুলে ধরেন।
এতে তিনি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যের উল্লেখ করেন। সেমিনারে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে স্টোন ক্রাশারগুলো গ্রামাঞ্চলে যত্রতত্রভাবে কীভাবে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে সেই চিত্র তুলে ধরা হয়। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধভাবে ও ছাড়পত্র ছাড়া ২৩৮টি স্টোন ক্রাশার মেশিন বসানো হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ২৬ টি, ছাতকে ১০০ টি, তাহিরপুরে ৮৮টি ও জামালগঞ্জে ২৪ টি। তবে এই সংখ্যা নিয়েও মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এর চেয়ে বেশি পরিমাণে অবৈধ স্টোন ক্রাশার রয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করেন না। নাম না প্রকাশের শর্তে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘মেশিন চলার সময় বেশ শব্দ হয়। এসব শব্দের মধ্যেই আমাদের থাকতে হচ্ছে। এ ছাড়া এই বিকট শব্দের কারণে শিশু-বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
বেলা’র সমন্বয়ক শাহেদা আখতার বলেন, ‘সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলায় বিপুলসংখ্যক ক্রাশার মেশিন আছে। বেশির ভাগ ক্রাশার মেশিনগুলো সুরমা নদীর তীর সংলগ্ন ও বসতভিটা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে বসানো হয়েছে। এসব ক্রাশার মেশিনগুলো কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজের একটি শ্রেণি লাভবান হলেও জনস্বাস্থ্য ও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বিরাট নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জেলা প্রশাসক মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জে ২৩৮ টির বেশি ক্রাশার মেশিন হবে। তবে আমরা প্রথমে ক্রাশার মালিকদের সচেতন করব। আমরা চেষ্টা করব একটা জোনের মধ্যে এগুলোকে আনার। প্রথমে সচেতন করার পরও যদি কথা অমান্য করে, তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিএ/২১ডিসেম্বর